“সন্দেশখালি নিয়ে কথা বলেন, কর্মীর সঙ্গে কেন এমন করলেন?” নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালকে আক্রমণ মমতার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্ধমান পূর্বের চিকিৎসক তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকারের (Sharmila Sarkar) সমর্থনে আজ জোড়া সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রায়নার সভা মঞ্চ থেকেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, ওই যুবতীকে দু’বার ‘মলেস্ট’ করেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “(মেয়েটি) বলেছে যে আমি আর কখনও রাজভবনে চাকরি করতে যাব না। ভয় পাচ্ছে। কখন যখন-তখন ডেকে খারাপ ব্যবহার করবে, অসম্মান করবে।”
শুক্রবার মমতা বলেন, “একটা ছোট্ট মেয়ে রাজভবনে চাকরি করত বিবিএক্সে। তার সঙ্গে কী ব্যবহার করেছেন মাননীয় রাজ্যপাল মহাশয়? আপনি আমায় কালও বলে পাঠিয়েছেন, আমার মন্ত্রী আপনাকে কেন এসব বলেছে। শুনে রাখুন, আমার কাছে একটা নয়, ১,০০০ টা ঘটনা এসেছে। কিন্তু আমি কোনওদিন কোনও কথা বলিনি। কিন্তু কাল মেয়েটির কান্নায় আমার হৃদয় ভেঙে গিয়েছে।”
মোদী বঙ্গ সফরে আছেন, রাজভবনেই ছিলেন গতকাল। তাঁকে মমতার প্রশ্ন, “আপনি সন্দেশখালি নিয়ে সন্দেশ দিয়ে বেড়াচ্ছেন, সন্দেশখালি নিয়ে বলার আগে আপনি বলুন রাজ্যপাল (Governor) কেন তাঁর কাজের মেয়েকে, কেন তাঁর ঘরে কাজ করে বলে এক বার নয়, পরপর দু’বার মলেস্ট করেছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের একটি মেয়েকে একবার নয়, পরপর দু’বার মলেস্টেশন করেছেন। আমি তো তার কান্না দেখলাম। আমার কাছে তার ভিডিয়ো এসেছে। আমি পুরো মন দিয়ে দেখেছি।”
আরও ঝাঁঝ বাড়িয়ে বলেন, “সন্দেশখালির কথা বলেন। সন্দেশখালিতে আমি কিছুই ঘটনে দিইনি। জমিজমা নিয়ে অভিযোগ ছিল। আমাদের অফিসাররাই মিটিয়ে দিয়ে এসেছে। আর আপনি কী করছেন? একটা ছোট্ট মেয়ে…রাজভবনে চাকরি করত, তার সঙ্গে কী ব্যবহার করেছেন রাজ্যপাল?”
মমতার আগে বর্ধমানে সভা করেন মোদী (Modi), সেখানে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ নিয়ে একটি শব্দও ব্যয় করেননি মোদী। তাই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, “সেখানে তো থেকে এলেন, একটা কথাও তো বললেন না।”
আজ মোদী জানান, যোগ্য চাকরি হারাদের পাশে থাকবে বিজেপি। তাঁর বক্তব্যকে বিঁধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কাজ নেই কর্ম নেই। প্রধানমন্ত্রীর কী বলা উচিত তা জানেন না। চাকরি হারাদের নিয়ে এতদিন পর কথা বলছেন। রাজ্য সরকার, স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা লড়ছে। আমরা চাকরি খেতে দেব না। কোথায় ছিলেন মোদীবাবু? ২৬ হাজার চাকরি তো আপনি খেয়েছেন। মানে আপনার দল খেয়েছে। তারা সিপিএম-কে টাকা দিয়ে মামলা করিয়ে চাকরি খেয়েছে ছেলে-মেয়েদের। আপনার কোনও প্রয়োদন নেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এরা চাকরিও কেড়ে নেবে আবার বড় বড় কথা বলবে।”
মোদীকে কটাক্ষ করে মমতা বলেছেন, “এরা এক দিকে চাকরি খাবে, আর এক দিকে বড় বড় কথাও বলব। আসলে এরা সাপের গালেও চুমু খায়, ব্যাঙের গালেও চুমু খায়। আয়নায় নিজের মুখ দেখুন। আজ ভোটের দরকার। তাই আট দিন পরে এসে মোদী এ সব কথা বলছেন। আর এই আট দিনে আমরা সুপ্রিম কোর্টে কেস লড়তে শুরু করে দিয়েছি। আর ২৬ হাজার চাকরি তো আপনি খেয়েছেন।”
মমতার অভিযোগ, ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি বলেছিল, বামেরা যে শিক্ষকদের চাকরি খেয়েছিল, সেই ১০ হাজার জনকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা করেনি। মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, অনেক পুলিশকে বাংলা থেকে অন্য রাজ্যে ভোটের ডিউটিতে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অথচ তাদের পোস্টাল ব্যালট দেওয়া হয়নি। কেন তাদের দেওয়া হবে না। সেই প্রশ্ন তুলে মমতা জানান, তিনি এই বিষয়ে ছেড়ে কথা বলবেন না। প্রয়োজনে আদালতে যাবেন।