ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তারি নয়! ED-র ক্ষমতায় বেড়ি পরাল সুপ্রিম কোর্ট?
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: বিরোধীরা টিপ্পনি কেটে বলেন, মোদী-শাহের দুই ভাই ইডি আর সিবিআই! বিরোধীদের জব্দ করার মোদীর প্রিয় হাতিয়ারকে কিছুটা ভোঁতা করল শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার ইডির ডানাই ছেঁটে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আর ইচ্ছামতো গ্রেপ্তারির পথে এগোতে পারবে না। বিশেষ আদালতের অনুমতি ছাড়া আর কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না ইডি। ভোটপর্বে বিজেপি সরকারকে একের পর এক ধাক্কা দিচ্ছে শীর্ষ আদালতে; ইলেক্টরাল বন্ড থেকে শুরু করে আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিন মেলা, ইউএপিএ ধারায় ধৃত ‘নিউজক্লিক’ প্রতিষ্ঠাতার গ্রেপ্তারিকেই বেআইনি আখ্যা ও অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ!
বিচারপতি অভয় এস ওকা ও উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ জানিয়েছে, বিশেষ আদালত কোনও অভিযোগ গ্রহণ করার পর আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের (পিএমএলএ) ১৯ নম্বর ধারায় কোনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না ইডি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সমন জারি করবে স্পেশাল কোর্ট। সমন মেনে কোনও অভিযুক্ত এজলাসে হাজির হলে, সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না ইডি। অভিযুক্তকে হেপাজতে নিতে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। অভিযুক্তকে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে যদি আদালত মনে করে, তবেই সেই নির্দেশ দেওয়া যাবে। একতরফা গ্রেপ্তারি রুখতে ইডির হাত বেঁধে দিল শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আইন সংশোধন করে ইডির হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা তুলে দিয়েছিল মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিজেপি সরকারের মুখ পুড়ল।
পিএমএলএ-র ৪৫ নম্বর ধারা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানান, সমন মেনে অভিযুক্ত আদালতে উপস্থিত হলে তাঁকে আর জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে না। ৪৫ নম্বর ধারায় জোড়া শর্ত রাখা হয়েছিল, আর্থিক তছরুপের মামলায় কোনও অভিযুক্ত জামিনের আবেদন করলে, আদালতকে আগে সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য শুনতে হবে। অভিযুক্ত দোষী নন ও মুক্তি পেলে একই ধরনের অপরাধ আর করবেন না, সেব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে কোর্টকে। তখনই জামিনের আবেদন মঞ্জুর হবে। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, বিশেষ আদালত মামলা গ্রহণ করার পর আর্থিক তছরুপে অভিযুক্তর জামিনে দুই শর্ত আর প্রযোজ্য হবে না। ইডির অতিরিক্ত ক্ষমতা ছেঁটে দেওয়া হল। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোনও অভিযুক্ত যদি সমনে সাড়া না দেন, একমাত্র সেক্ষেত্রেই ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৭০ ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা যাবে। অভিযুক্ত প্রথমবার এমন করলে পরোয়ানা জামিনযোগ্য হবে।