জিএসটির ক্ষতিপূরণ নয়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিতে বলে দায় সারল কেন্দ্রীয় সরকার
জিএসটি বাবদ রাজ্যের আর্থিক ক্ষতির দায় নেবে না কেন্দ্রীয় সরকার। লকডাউনের সময় আর্থিক লোকসান বাবদ রাজ্যগুলিকে কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, বৃহস্পতিবারের জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অধরাই থেকে গেল। বরং ক্ষতিপূরণের দায় ঝেড়ে ফেলে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যগুলিকে বলা হল, ক্ষতি সামলাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিন। সেই প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে দু’টি বিকল্প পথ দেখানো হয়েছে রাজ্যগুলিকে। সাতদিন পর রাজ্যগুলি জানাবে তাদের অভিমত। রাজ্যগুলির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জেনে কেন্দ্রীয় সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে অনুরোধ করবে, যাতে ঋণ গ্রহণ প্রক্রিয়া সহজ হয়। এই লক্ষ্যে এফআরবিএম আইন (ফিসক্যাল রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট) শিথিল করে ঋণ গ্রহণের ঊর্ধ্বসীমা ০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
লকডাউনের জেরে জিএসটি সংগ্রহ তলানিতে আসায় চলতি আর্থিক বছরে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতির সম্ভাবনা। এর মধ্যে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সেস বাবদ আসবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। আর বাকি ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটির লোকসান সামলাতে রাজ্যগুলি হিমশিম। সেই কারণেই ঋণ গ্রহণের প্রস্তাব কেন্দ্রের। তারা দিচ্ছে দুটি বিকল্প। প্রথমত, রাজ্য চাইলে কম ঋণ গ্রহণ করুক (৯৭ হাজার কোটি টাকা) এবং সেই ঋণ পরিশোধ করুক ২০২২ সালের পর। অর্থাৎ জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা রাজ্যগুলিকে দিতে কেন্দ্র অঙ্গীকারবদ্ধ, সেই সময়সীমা সমাপ্ত হওয়ার পর থেকে ঋণ পরিশোধ শুরু হোক। জিএসটি সেস সংগ্রহের টাকা থেকেই সেই ঋণ পরিশোধ করতে পারে রাজ্য। আর দ্বিতীয় বিকল্প হল, যত ক্ষতি হয়েছে সবটাই (২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা) এখন রাজ্য ঋণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। আগামী দিনে সংগৃহীত জিএসটি সেস থেকে সেই ঋণ মেটাতে হবে।
বৃহস্পতিবার জিএসটি কাউন্সিলের পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে রীতিমতো ঝড় ওঠে। পাঞ্জাব, কেরল, বাংলা, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড সকলেই বলে, আমরা কেন ঋণ করব? কেন্দ্র করুক। রাজ্যের রাজকোষ তো এমনিতেই শূন্য! তার উপর নতুন করে ঋণ নেওয়ার অর্থ, আবার পরিশোধের জালে জড়িয়ে যাওয়া। রাজ্যগুলি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে বলে, জিএসটি আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য কেন্দ্র। কিন্তু সরকারের পাল্টা দাবি, স্বাভাবিক কারণে জিএসটি আদায় কমেনি বা আর্থিক ক্ষতি হয়নি। এটা বলা যায় ‘অ্যাক্ট অব গড’! তবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এখন কোনও পণ্য ও পরিষেবার জিএসটি নতুন করে বাড়ানো হবে না। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এটাই একমাত্র স্বস্তির।