রামকেলির মদন মোহন মন্দিরের প্রাচীন রীতি মেনে মহোৎসবে চার বেলা এলাহি ভোগের আয়োজন

পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার ইংরেজবাজার থানার একটি সমৃদ্ধশালী গ্রাম হল এই রামকেলি। ঐতিহাসিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া না গেলেও কথিত আছে যে রামচন্দ্র তার শ্বশুরবাড়ি মিথিলা যাওয়ার সময় তখনকার নাম পুণ্ড্রুদেশ বর্তমানে মালদাতে কিছুদিন দিন যাপন করেছিলেন।

June 15, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার ইংরেজবাজার থানার একটি সমৃদ্ধশালী গ্রাম হল এই রামকেলি। ঐতিহাসিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া না গেলেও কথিত আছে যে রামচন্দ্র তার শ্বশুরবাড়ি মিথিলা যাওয়ার সময় তখনকার নাম পুণ্ড্রুদেশ বর্তমানে মালদাতে কিছুদিন দিন যাপন করেছিলেন। সেখানে কালিন্দী নদীর তীরে আমবাগানে রামচন্দ্র আমের স্বাদে গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে ফলকেলি শুরু করেছিলেন। রামচন্দ্র আম নিয়ে কেলি করায় এই অঞ্চলের নাম হয়ে যায় রামকেলি।

বৃন্দাবন দাস রচিত চৈতন্য ভাগবতেও এই গ্রামের উল্লেখ পাওয়া যায়। ১৫১৪ সাধারন অব্দে মতান্তরে ১৫১৫ শ্রীচৈতন্যদেবের রামকেলি গ্রামে আগমন হয়। ভক্তি ধর্ম প্রচারে শ্রী চৈতন্যদেব বেরিয়েছিলেন দাক্ষিণাত্য উড়িষ্যায়। সেখান থেকে মথুরা বৃন্দাবন যাওয়ার পথে গৌড়ে আসেন তিনি। তখন রামকেলি গ্রামে তিনি দিন তিনেক ছিলেন। সময়টা ছিল জুন মাসের মাঝামাঝি জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তি। তখনই হোসেন শাহ তখনকার দিনের গৌড়ের সুলতান ছিলেন যার দুইজন রাজকর্মচারীকে সনাতন ও রুপকে তিনি কৃষ্ণ মন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন। এই সনাতন গোস্বামীর পূর্বনাম ছিল অমর ও রুপ গোস্বামীর পূর্ব নাম ছিল সন্তোষ। দীক্ষা গ্রহণের পরে কিন্তু অমরের নাম হয় সনাতন গোস্বামী।

তখন মহাবৈষ্ণব রূপ এবং সনাতন গোস্বামী চৈতন্যকে কলাই ডাল, কচু শাক সেবা দিয়েছিলেন বলে কথিত রয়েছে। সেই পরম্পরা রামকেলিতে এখনও অক্ষুন্ন। মহোৎসবের তিনদিন মদন মোহন মন্দিরে প্রাচীন রীতি মেনে এবারও ভোগে থাকবে সেই বিশেষ দুই পদ। শুধু তাই নয়, মহাপ্রভুর জন্য কয়েকদিন চার বেলা এলাহি ভোগের ব্যবস্থা থাকছে।

মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ, শনিবার ভোর থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত মহাপ্রভুর বিশেষ সেবা দেওয়া হবে। ভোরে প্রভুকে ছানা, ফল, মিছরি নিবেদন করা হবে। এরপর সাড়ে ন’টার পর বাল্য ভোগে লুচি, সুজি, মিষ্টি, ক্ষীর, দই দেওয়া হবে। দুপুরে মাস কলাইয়ের ডাল, বিভিন্ন রকম অন্ন, পনির, কচু শাক, সব্জি, মিষ্টি সহ ৫০ বেশি রকমের পদ থাকবে। বিশ্রামের পরে বিকেলে সরবত এবং রাতে লুচি, মিষ্টান্ন, ছানা দিয়ে প্রভুর ভোগ হবে।

রামকেলি মদন মোহন মন্দিরের সেবায়েত মদন মোহন পাণিগ্ৰাহী বলেন, রামকেলিতে মহাপ্রভু চরণধূলি দিয়েছিলেন। তিনদিন ছিলেন। এটা আমাদের সৌভাগ্য। তখন মহাবৈষ্ণব রূপ এবং সনাতন গোস্বামী প্রভুর সেবাযত্নে কোনও ক্রটি রাখেননি। তাঁরা প্রভুকে কচু শাক এবং কলাই ডাল সেবা দিয়েছিলেন। সেই রীতি মেনে এবারও তা দেওয়া হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen