অ্যাক্রোপলিসের অগ্নিকাণ্ডের পর শহরের মলগুলির অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অ্যাক্রোপলিস মল লাগোয়া বহুতলে রয়েছে একাধিক নামী সংস্থার দপ্তর। নিত্যদিন সেখানে আসেন কর্মীরা। শুক্রবার দুপুরে আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কর্মীরা। তড়িঘড়ি তাঁদের নেমে আসতে বলা হয়। অথচ আগুন লাগলে লিফট বা চলমান সিঁড়ি ব্যবহার করার নিয়ম নেই। শপিং মলের পিছনে থাকা ‘ফায়ার এগজিট’ সিঁড়িই একমাত্র ভরসা।
এদিকে অব্যবহারে সেই সিঁড়িতে জমায়েত রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। কোথাও বালির বস্তা, কোথাও লোহালক্কড়, কাঠের টুকরো। আলো নেই তেমন। সেই সিঁড়ি দিয়েই নামতে হবে আটকে পড়া ক্রেতা থেকে কর্মী, সবাইকে। প্রায় পদপিষ্ট হওয়ার মত পরিস্থিতি। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানালেন, তার মধ্যে আবার অত্যুৎসাহী জনতা থেমে থেমে ভিডিও করছেন। যাতে বিশৃঙ্খলা আরও বেড়ে যায়।
এক ব্যক্তি জানান, ১৮ তলা থেকে নামার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলা। সহকর্মীরা তাঁকে ট্যাক্সিতে চাপিয়ে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া আটকে পড়েছিলেন দুই প্রতিবন্ধীও। প্রত্যেকেই মল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
সাততলার অফিস থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে বেরন বেসরকারি সংস্থার মালিক অজয় আগরওয়াল। সেই সকল কর্মীদের মধ্যেই ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা মমতা সাহু। অজয় আগরওয়াল জানিয়েছেন, অন্ধকার সিঁড়ির মধ্যে পড়েছিল লোহার রড, সিমেন্টের বস্তা, আবর্জনা। সে সব টপকে হাজার খানেক মানুষের স্রোত সিঁড়ি দিয়ে নামে।। সেই সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর অফিসের কর্মী মমতা। অজয় নিজেও লোহার রডে আঘাত পেতে পেতে বেঁচে যান।
অতীতে একাধিক অগ্নিকাণ্ডে বিপদের সময়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে না পারায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শহরে। তার পরেও শহরের একটি ব্যস্ত শপিং মলে এই পরিস্থিতি থাকে কী করে? ঘটনাস্থলে উপস্থিত দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই খোঁজ নেব। যদি কারও গাফিলতি থাকে, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ একই সুরে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, ‘‘ওই রকম সময়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে গিয়ে সমস্যা হওয়াটা মারাত্মক ব্যাপার। কেন এমন হয়েছে, পুলিশ নিশ্চয়ই দেখবে।’’ লালবাজারের তরফে যদিও এ নিয়ে সরাসরি প্রতিক্রিয়া মেলেনি। দমকলের তরফে অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্তের মধ্যে আনা হবে বলে জানান এক পুলিশকর্তা।
এই সপ্তাহের গোড়াতেই পার্ক স্ট্রিটে একটি বহুতলে আগুন লেগেছিল। প্রবল উদ্বেগ ছড়িয়ে ছিল সেখানেও। চার দিনের মাথায় এবার আগুন লাগল শহরের একটি বিখ্যাত শপিংমলে। অগ্নি নির্বাপন নিয়ে এখানেও প্রশ্ন উঠেছে।