বউবাজারের জট কাটল, শীঘ্রই হাওড়া থেকে এক মেট্রোরেলে চড়েই পৌঁছে যাওয়া যাবে সেক্টর ফাইভে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শহর কলকাতার বুকে একের পর এক প্রকল্পে কাজ করছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ৩টি নয়া সেকশনের উদ্বোধনও হয়েছে। এবার নজরে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদা সেকশন। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত সম্পূর্ণ রুটে কবে যাত্রী পরিষেবা শুরু হবে, তা জানতে চাইছেন যাত্রীরা। এই বিষয়ে এবার বড় ইঙ্গিত দিল কলকাতা মেট্রোরেল। শীঘ্রই হাওড়া থেকে এক মেট্রোরেলে চড়েই পৌঁছে যাওয়া যাবে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে।
গঙ্গার নীচে দেশের প্রথম মেট্রোরেল! জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এখন কলকাতা। কিন্তু বাংলার এই গর্বে চোনা ফেলে দিয়েছে বউবাজার বিপর্যয়। তার জেরে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান —ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্ণাঙ্গ রুটে পরিষেবা এখনও অধরা। ভুগছেন লক্ষ লক্ষ যাত্রী। এই পরিস্থিতির কারণ পরপর দু’বার বউবাজারে মেট্রো টানেলে জল ঢুকে বিপত্তি! তাই শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড স্টেশন পাতালপথে সংযুক্ত করা যায়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার সাফল্যের শেষ হল সেই গুরুত্বপূর্ণ মহাযজ্ঞ। দীর্ঘ দেড় বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে মেট্রো প্রকল্পের টানেলে ‘জল-আতঙ্কের’ স্থায়ী সমাধান করা গিয়েছে। অর্থাৎ বউবাজারে জল ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গপথ এখন একেবারে ‘ড্রাই’। বিশ্বমানের রাসায়নিক, কংক্রিট সহ একাধিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ‘ক্রস প্যাসেজ ২’ বা ‘সিপি-২’।
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রী নিষ্ক্রমণের জন্য কংক্রিটের জোড়া টানেল ফুটো করে পথ (সিপি-২) তৈরি করা হচ্ছিল। ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর সেই কাজ করতে গিয়েই বিপর্যয় ঘটেছিল বউবাজারে। প্রতি মিনিটে প্রায় এক হাজার লিটার জল ঢুকে পড়ে পাতালপথে। তার ধাক্কায় সুড়ঙ্গে চলে আসে ৭০০ কিউবিক মিটার মাটি। সবমিলিয়ে এক অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর ঘনবসতিপূর্ণ বউবাজারের বালি মাটির প্রতিকূল চরিত্র বুঝে সেখানে প্রস্তাবিত ‘সিপি-২’ নির্মাণের গোটা পরিকল্পনাই বাতিল করে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে জল আটকানোর জন্য বিবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছিল। শেষমেশ এদিন ভোর ৬টায় মেট্রো টানেলের সেই ‘অভিশপ্ত ছিদ্র’ পুরোপুরি বন্ধ করার কাজ শেষ হয়েছে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আইটিডি-সিমেন্ট্রেশন ইন্ডিয়া লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার পিনাকী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গত দেড়বছর বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবশেষ টানেলের ওই অংশ স্থায়ীভাবে বন্ধ করা গিয়েছে। এই কাজের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১৫৫ জন এলাকাবাসীকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই স্পর্শকাতর এই কাজটি সম্পূর্ণ করা গিয়েছে। পূর্বমুখী টানেলের সামান্য অংশের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তা শেষ হলেই এসপ্ল্যানেড-শিয়ালদহ জুড়ে যাবে।