অবমাননা মামলায় প্রশান্ত ভূষণকে ১ টাকা জরিমানা করল সুপ্রিম কোর্ট
আদালত অবমাননার দায়ে প্রশান্ত ভূষণকে এক টাকা জরিমানা করল সুপ্রিম কোর্ট। তা দিতে না পারলে তিন বছর প্র্যাকটিস করতে পারবেন না এবং তিন মাসের জেল হবে।
এর আগে, গত ২৭ জুন সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে একটি টুইট করেছিলেন ভূষণ। লেখেন, ‘সরকারিভাবে জরুরি অবস্থা না থাকা সত্ত্বেও গত ছ’বছরে কীভাবে ভারতের গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে, তা দেখার সময় সেই ধ্বংসে ইতিহাসবিদরা সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা বিশেষভাবে চিহ্নিত করে রাখবেন এবং আরও বিশেষ করে ভারতের শেষ চারজন প্রধান বিচারপতির ভূমিকা (চিহ্নিত করবেন)।’ দু’দিন পর প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদকে নিয়ে টুইট করেন বিখ্যাত আইনজীবী ও সমাজকর্মী। তিনি বলেন, ‘মাস্ক বা হেলমেট না পরেই নাগপুরের রাজভবনের এক বিজেপি নেতার ৫০ লাখ টাকার মোটরসাইকেল চালিয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি। সেই সময়, যখন তিনি সুপ্রিম কোর্টকে লকডাউন মোডে রেখে নাগরিকদের বিচার পাওয়ার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন।’
সপ্তাহদুয়েক পরে ভূষণের সেই টুইটের প্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান মেহেক মাহেশ্বরী নামে এক আইনজীবী। তবে পিটিশন দাখিলের আগে নিয়ম মোতাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপালের সম্মতি নেননি মাহেশ্বরী। মাহেশ্বরীর আর্জির ভিত্তিতে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ২২ জুলাই আইনজীবী ভূষণকে নোটিশ পাঠায় শীর্ষ আদালত।
তারপর চলতি মাসের পাঁচ তারিখ শীর্ষ আদালতে সেই মামলার শুনানি হয় এবং ১৪ অগস্ট ভূষণকে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালত অবমাননার জন্য তাঁর কী শাস্তি হবে, সেই সিদ্ধান্তের জন্য ২০ অগস্ট মামলার শুনানি ধার্য করা হয়। সেদিন শুনানির সময় ভূষণ জানান, নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন তিনি। একটি বিবৃতি পড়ে ভূষণ দাবি করেন, তাঁর উদ্দেশ্যের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেদিন অবশ্য শাস্তি নিয়ে আর শুনানি হয়নি। বরং নিজের অবস্থান নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ভূষণকে দু’দিন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত।
কিন্তু ২৪ অগস্টও নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন ভূষণ। সুপ্রিম কোর্টে জানান, ভালো উদ্দেশ্যেই তিনি টুইট করেছিলেন। আদালত বা প্রধান বিচারপতিকে কালিমালিপ্ত করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি শুধুমাত্র গঠনমূলক সমালোচনা করেছিলেন। সেদিনও ক্ষমাও চাননি তিনি।
তবে প্রশান্ত ভূষণকে শাস্তি না দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি সওয়াল করেন, সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হোক প্রখ্যাত আইনজীবীকে। যদিও বেঞ্চ জানায়, ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেছেন ভূষণ এবং নিজের অবস্থানেও অনড় রয়েছেন তিনি।