প্রেমিকার জন্য পাড়ি দিচ্ছে গিরের সিংহমশাই

প্রেমিক বয়সে নবীন। তাই প্রতি মাসেই দু’বার করে ‘এটুকু’ পথ পাড়ি দেয় সে। প্রেমিকের সঙ্গে থাকা তিন সিংহও যথেষ্ট সংবেদনশীল। বন্ধুর ‘ডেটিংয়ে’ কখনো ‘কাবাব মে হাড্ডি’ হয় না তারা।

February 13, 2020 | 2 min read

Authored By:

Drishti Bhongi Drishti Bhongi

এশিয়াটিক সিংহ। গিরের জঙ্গলে সারাদিন গা এলিয়ে পড়ে থাকাই দস্তুর। তা বলে কি প্রেম হতে পারে না? প্রেমিকার জন্য সিংহমশাই তিন বন্ধুকে নিয়ে ৫০-৬০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন। আমরেলির রাজুলা থেকে সাভারকুণ্ডলা তালুকা। ওখানেই বসে থাকে তার প্রেমিকা, এক সিংহী।

প্রেমিক বয়সে নবীন। তাই প্রতি মাসেই দু’বার করে ‘এটুকু’ পথ পাড়ি দেয় সে। প্রেমিকের সঙ্গে থাকা তিন সিংহও যথেষ্ট সংবেদনশীল। বন্ধুর ‘ডেটিংয়ে’ কখনো ‘কাবাব মে হাড্ডি’ হয় না তারা। চার চক্ষুর মিলন হলেই তারা নিজেদের মতো হেঁটে এগিয়ে যায় আরও খানিকটা রাস্তা। গিরের সিংহদের প্রতিনিয়ত ‘ট্র্যাক’ করতে থাকা বনকর্মী ও স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অদ্ভুত এই ‘সিলসিলা’ চলছে প্রায় এক বছর ধরে!

প্রেমিকের বয়স বছর চার-পাঁচ। তার সঙ্গীদেরও তাই। তারুণ্যের তেজে খেলায় থাকে না, কখন হাঁটতে হাঁটতে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পৌঁছে গিয়েছে। বন দপ্তরের সঙ্গে কাজ করা আমরেলির এক ‘লায়ন ট্র্যাকার’ বলছেন, ‘আমরা দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যাই যে প্রেমিক সিংহের বাকি তিন সঙ্গী কোনও দিন বন্ধুর প্রেমালাপে বাধা হয় না। সাভারকুণ্ডলার কাছে অম্বারদি বলে একটি জায়গায় মূলত সিংহ-সিংহীর দেখা হয়। ওখানেই ওরা দু’জন বসে থাকে। বাকি তিন জন কখনও ওদের মধ্যে যায় না। দু’জনের ‘ব্যক্তিগত মুহূর্তে’ বাধাও দেয়নি কোনও দিন।

ঘটনাচক্রে, চার সিংহের আদি নিবাস গিরের পূর্ব অংশে, ধাড়ি রেঞ্জে। তবে বছরখানেক আগে তারা রাজুলায় সরে আসে। গিরের বনকর্তা সন্দীপ কুমারের কথায়, ‘এটা হামেশাই দেখা যায় যে একটু ভবঘুরে প্রকৃতির তিন-চারটে সিংহ হঠাৎই দলবদ্ধ হয়ে এলাকার পর এলাকা চষে বেড়ায়। তবে এই বন্ধুত্ব বেশিদিনের নয়। ওরা সবাই সঙ্গিনী খোঁজে। পেলেই নিজেদের মতো আলাদা হয়ে যায়।’ যদিও চাঞ্চল্যকর তথ্য এটাও যে, দলবদ্ধ ভাবে চারটি সিংহ মাঝেমধ্যেই একশোরও বেশি কিলোমিটার পথ যাতায়াত করছে, যা একেবারেই দেখা যায় না।

গিরের বনকর্তারা জানাচ্ছেন, এই চারটি পুরুষ সিংহ স্বভাবে যথেষ্ট রুক্ষ এবং বাকি জীবজন্তু ও এলাকার অন্য সিংহরা এদের নিয়ে তটস্থ হয়ে থাকে। দু’একটি সিংহ তো নিজেদের জায়গা ছেড়ে তুলনায় নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গিয়েছে শুধু এদের সঙ্গে ঝামেলার ভয়ে। তবে প্রেমিকার দর্শন পেলেই যাবতীয় তর্জন গর্জন ছেড়ে গুটিগুটি পায়ে তার কাছে চলে যায় প্রেমিক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen