গালওয়ানের পর এবার প্যাংগং লেকে ভারত-চিন সংঘর্ষ
নতুন করে সংঘর্ষে জড়াল ভারতীয় জওয়ান ও চিনা সেনা। গালওয়ান ভ্যালির পর এবার প্যাংগং লেক। জানা গিয়েছে ৩০ তারিখ রাতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ২৯ ও ৩০ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে আচমকাই নিজেদের অবস্থান ছেড়ে এগিয়ে আসে চিনা সেনা।
এই পরিস্থিতিতে যোগ্য জবাব ভারতীয় জওয়ানরাও। চিনা সেনাদের এগিয়ে আসা থেকে রুখতে প্রথমেই বাধা দেন ভারতীয় জওয়ানরা। স্বল্প মাত্রার হাতাহাতি হয় বলে সেনা সূত্রে খবর। সোমবার এই ইস্যুতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ভারতীয় সেনা। পরিস্থিতি যাতে নতুন করে উত্তপ্ত না হয়ে ওঠে, সেজন্য চুশুলে ভারতীয় ও চিনা ব্রিগেড কমান্ডার স্তরের বৈঠক শুরু হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর প্যাংগং লেকে সুযোগ বুঝে এগিয়ে এসেছিল চিনা সেনা। জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও। কোনওভাবেই চিনা সেনার দখলদারি মেনে নেওয়া হবে বলে এদিন জানিয়ে দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
তবে পরিস্থিতি কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কোনও তরফেই কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এরপরেই লাদাখ জুড়ে ভারতীয় সেনাকে সতর্ক করা হয়েছে। ভারতীয় সেনার জনসংযোগ আধিকারিক কলোনেল আমন আনন্দ জানিয়েছেন চিনা সেনাই প্রথমে নিজেদের অবস্থান ছেড়ে বেরিয়ে আসে। চিনা উসকানিতেই নতুন করে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ভারতীয় সেনা শান্তি ও স্থিতাবস্থার পক্ষে। কিন্তু দখলদারির মনোভাবের কড়া জবাব ভারতীয় সেনা দিতে পারে বলে ট্যুইট করেন কলোনেল আনন্দ। অন্যদিকে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে বড় সংখ্যক চিনা সেনাই ভারতীয় সীমান্তের দিকে ঢুকে আসতে চেয়েছিল।
কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টা পুরোপুরি ব্যর্থ করে দেয় ভারতীয় সেনা। এর আগে গালওয়ানে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় শহিদ হন ভারতের এক আর্মি অফিসার সহ ২০ জওয়ান। চিনের অন্তত ৪৩ জন সেনার মৃত্যু হয় বলে খবর।কিন্তু সেখবর স্বীকার করতে চায়নি বেজিং।
তারা জানিয়ে ছিল পিএলএ-র ঠিক কতজন জওয়ান মারা গিয়েছে, তা তারা জানাতে চায় না। তাই নতুন করে চিনের মৃত জওয়ানদের সংখ্যা নিয়ে কিছু বলার নেই। এদিকে, যদি বৈঠক ব্যর্থ হয় তবে ভারতের হাতে সামরিক পথ খোলা আছে। সেই পথেই চিনা সেনার আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেবে ভারত। এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত।
রাওয়াতের দাবি ছিল কূটনৈতিক স্তরে ও সামরিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই এখনও পর্যন্ত তেমন ফল আসেনি। ষষ্ঠ দফার বৈঠকের পরেও সমাধানসূত্র অধরা ভারতের কাছে।
সিডিএস বলেন যদি বৈঠকের ফলই ব্যর্থ হয়, তবে অন্য রাস্তাও খোলা রয়েছে চিনা সেনার আগ্রাসনের জবাব হিসেবে। তাহলে কি সেই সংঘাতের রাস্তায় হাঁটার কথা বলতে চেয়েছিলেন বিপিন রাওয়াত, প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।