১৪ বছর পর ব্রিটেনের ক্ষমতায় লেবার পার্টি, উচ্ছ্বসিত বঙ্গ সিপিএমের একাংশ ‘লাল সেলাম’ জানাচ্ছেন!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ব্রিটেনে আপাতত ঋষি সুনক অধ্যায় সমাপ্ত। টোরিদের কার্যত দুরমুশ করে ১৪ বছর পর ব্রিটেনের ক্ষমতায় লেবার পার্টি। নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। তাতেই উচ্ছ্বসিত বঙ্গ সিপিএমের একাংশ। কর্মী-সমর্থকরা বলছেন, ‘লাল ঝড়’। কারণ, পার্টির নাম লেবার, পতাকার রং লাল! রাজ্য কমিটির এক সদস্যও সোশ্যাল মিডিয়ায় লেবার পার্টির জয়ের খবর দিয়ে লিখেছেন, ‘৪০০ পার’। লালপার্টির কিছু অতি উৎসাহী কর্মী-সমর্থক এখানেই না থেমে ব্রিটেনকে ‘লাল সেলাম’ পর্যন্ত জানাচ্ছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, ব্রিটেনের ভোটে জয়ী লেবার পার্টিকে বামপন্থী বলা যায় না। এমতাবস্থায় সিপিএম নেতৃত্ব মেনে নিচ্ছে যে দলে রাজনৈতিক চর্চার অভাব রয়েছে। ব্রিটেনে লেবার পার্টির জয় উদযাপন নিয়ে বিরুদ্ধ মতও উঠে এসেছে সিপিএমের মধ্যে। রাজ্য কমিটির আরেক সদস্য সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘ইতিহাস না জানলে লেবার পার্টি তো লাল সেলাম পাবেই।’ আন্তর্জাতিক রাজনীতির হালহকিকৎ নিয়ে বামপন্থীরা কমবেশি ওয়াকিবহাল থাকেন বলে মনে করেন অনেকে। তাঁরাই যেভাবে লেবার পার্টির জয়ে সাগরপারের দেশে বামপন্থার উত্থান খুঁজে পেলেন, তা দেখে স্বাভাবিক কারণেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বাম-বিরোধী শিবির।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা কাবেরী চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘লেবার পার্টি একেবারেই বামপন্থী নয়। বরং অনেক সময় ওদের কনজারভেটিভদের নরম রূপ বলা হচ্ছে। এবার প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট পেয়েছে লেবার পার্টি। সেটাকে দক্ষিণপন্থী বা বামপন্থী, এতখানি বলা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনার অবকাশ রয়েছে। আমি দেখেছি, বামপন্থীদের একাংশের মধ্যে একটা উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। কারণ, ঘোষিত দক্ষিণপন্থী দল পিছু হটেছে। তাছাড়া, লেবার পার্টির ইস্তাহারে স্বাস্থ্য, শ্রমিক, অর্থনীতি নিয়ে কিছু পুরনো কথা রয়েছে। এসব সেই অর্থে কিছুটা ইতিবাচক। তবে লেবাররা বহুদিন ধরেই বামপন্থায় নেই।’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘সমর্থক কেউ কেউ আছেন, যাঁরা এসব লিখছেন। লেবার পার্টি নাম বলে তাকে বামপন্থী-কমিউনিস্ট ভাবার কোনও কারণ নেই। দলের পুরনোরা এসব জানেন। নতুনরা হয়তো চর্চার সুযোগ পাননি। কিন্তু চরম দক্ষিণপন্থী দলের তুলনায় লেবার পার্টি ভালো। তবে কমিউনিস্ট বা সোশ্যালিস্ট বললে সেটা ভুল।’