তিস্তা চুক্তির জেরে পানীয় জল মিলবে না উত্তরবঙ্গে? কেন্দ্রের জলবণ্টন নীতির বিরুদ্ধে তোপ মমতার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নবান্ন থেকে কেন্দ্রের জলবণ্টন নীতির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করেন। রাজ্যকে আড়াল করে বাংলাদেশের সঙ্গে কেন্দ্রের জলবণ্টনের চেষ্টার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি কেন্দ্রকে চিঠিও দিয়েছেন। এবার সরাসরি নবান্ন থেকে কেন্দ্রের জলবণ্টন নীতির বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ফরাক্কা চুক্তি নবীকরণ হলে শুধু বাংলাই নয়, বিহারও কিন্তু ভাসবে। ফরাক্কা বাংলায়। অথচ, চুক্তির নবীকরণ করার সময় রাজ্যকে জানানোই হল না। এখন বলছে যে তিস্তার জলও দেবে বাংলাদশকে। কিন্তু, জল দেবে কী? তিস্তায় কী জল রয়েছে যে দেবে? যেটুকু আছে, সেই জল দেওয়া হলে, উত্তরবঙ্গে কেউ পানীয় জলই পাবেন না।
তিস্তায় সারা বছর তেমন জল না থাকলেও, বর্ষায় ভিনদেশ ও ভিনরাজ্যের বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে নদী অববাহিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়। উত্তরবঙ্গ প্রতি বছর বন্যায় ভাসে। এবারও সেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে ধস নেমেছে। সিকিমেও ধস নামায় বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সম্পর্কে রিপোর্ট আমি হাতে পেয়েছি। উত্তরবঙ্গে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। সেচ বিভাগ ইতিমধ্যেই পর্যবেক্ষণ চালু করেছে। দুর্গতরা যাতে যোগাযোগ করতে পারেন, সেজন্য প্রশাসনের তরফে নম্বর দেওয়া হবে। পাশাপাশি, মালদহে গঙ্গার পাড় ভাঙছে।’
কেন্দ্র বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখছে না। ক্ষোভ উগরে মমতা বলেন, গঙ্গার ভাঙনে যে বাড়িগুলো তলিয়ে গিয়েছে, সেগুলো পুনরায় নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলে কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেজন্য প্রয়োজনীয় ৭০০ কোটি টাকা আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে দেয়নি। গঙ্গার ভাঙন কেন্দ্রীয় সরকারের দেখার কথা। গত ১০-১২ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ চোখ বুজে আছে। কিছুই দেখছে না। ফরাক্কায় ড্রেজিং পর্যন্ত করেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে যখন চুক্তি হয়েছিল, তখন কথা হয়েছিল যে, বাংলাদেশে জল যাক, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গবাসীর যাতে সমস্যা না হয়, তা দেখা হবে। ড্রেজিং করা হবে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার গঙ্গায় ড্রেজিং না করায় অনেক বাড়ি ভাঙনে তলিয়ে গেছে।