বর্ষায় উত্তাল সমুদ্র, দিঘায় ক্ষণিকের মনোরঞ্জন করতে গিয়েই প্রাণ হারাচ্ছেন পর্যটকরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্ষার মরসুমে উত্তাল দিঘার সমুদ্র। বিপজ্জনক ঢেউয়ের মধ্যে ক্ষণিকের মনোরঞ্জন করতে গিয়েই প্রাণ হারাচ্ছেন পর্যটকরা। রবিবার সমুদ্রস্নানে নেমে মৃত্যু হয় উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ের বাসিন্দা দীপঙ্কর নন্দীর। ২৮ বছরের ওই যুবকের প্রাণহানির পর সোমবার উত্তর ২৪ পরগনা থেকে আসা আরও এক পর্যটক প্রাণ হারিয়েছেন। আকাশ সাহা নামে ৩০ বছরের ওই যুবক পরিবারের সঙ্গে দিঘা বেড়াতে এসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি এলাকা থেকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কামারহাটির বাসিন্দা আকাশ হোটেলের ঘরে খানিক বিশ্রাম নিয়েই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সমুদ্রস্নানে গিয়েছিলেন। নিউ দিঘার হলিডে হোম ঘাটের কাছে গার্ডওয়াল টপকে সৈকতে বাঁধানো ধাপে বসেছিলেন তাঁরা। সেই সময় একের পর এক উত্তাল ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছিল সমুদ্রতটে। আচমকাই একটি বিশালাকায় ঢেউ আছড়ে পড়ে আকাশের উপর। ঢেউয়ের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন ওই যুবক। পাশের কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই জলের তোড়ে ভেসে যেতে থাকেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত নুলিয়ারা ছুটে গিয়েছিলেন। কোনও ক্রমে আকাশকে তাঁরা উদ্ধারও করেন। কিন্তু, পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর মূলত জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকে। নিম্নচাপ এবং কোটালের জেরে সমুদ্র ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। ফলে এই সময়টায় দুর্ঘটনা ঘটে বেশি। গতবছরও মে-জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ জন পর্যটকের তলিয়ে মৃত্যু হয়েছিল। দীঘার সমুদ্রে যেমন ভিড়ের মধ্যেই পর্যটকরা স্নানে নেমে তলিয়ে যান, তেমনি উল্টোদিকে মন্দারমণিতে পুলিসি নজরদারি এড়িয়ে ফাঁকা জায়গায় স্নান করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিস আধিকারিকদের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পর্যটকদের অনেকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সমুদ্রে নামছেন। কর্তব্যরত নুলিয়া ও পুলিসকর্মীরা বাধা দিলে কিংবা বারণ করলেও তাঁরা শোনেন না। বরং তাঁদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। তাঁদেরই কারও কারও পরিণতি হয় মর্মান্তিক। গত মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ধরলে সংখ্যাটা ১০ জন। একের পর এক সলিলসমাধির ঘটনায় পুলিস প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, মৃত্যুমিছিল ঠেকাতে পুলিস প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে।