‘পুলিশওয়ালা কার্টুনিস্ট’ কোচবিহারের পুলিস সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। যিনি নিজেকে ‘পুলিশওয়ালা কার্টুনিস্ট’ বলতেই বেশি পছন্দ করেন। ২০১১ ব্যাচের আইপিএস অফিসার। বর্তমানে কোচবিহারের এসপি। শুধু পুলিস কর্তা হিসেবে নয়, কার্টুনিস্ট, চিত্র পরিচালক ও লেখক, পশু ও পরিবেশপ্রেমী হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর।
পুলিশের পেশায় এসেও শখটা হারাতে দেননি দ্যুতিমান। সার্ভিস রিভলভারের পাশাপাশি সর্বক্ষণ নিজের সঙ্গে রাখেন ড্রয়িং খাতা, পেন্সিল এবং স্কেচপেন। যখনই সময় পান, সাদা পাতায় ফুটিয়ে তোলেন নানা কিসিমের কার্টুন। লিশকর্তা দ্যুতিমানের কথায়, ‘পুলিশ হওয়ার সুবাদে বহু মানুষের সঙ্গে রোজ মেলামেশা করতে হয়। তাঁদের ভিতর থেকেই বাছাই করা কিছু চরিত্র উঠে আসে, যাঁদের নিয়ে কার্টুন করা যায়। এ ভাবেই কাজ করি। তাতে শখও মেটে।’
এখন যেমন অবসর সময়ে নিয়মিত ডায়েরিতে নথিবদ্ধ করছেন কোচবিহারে তাঁর স্মৃতি। কার্টুনের মাধ্যমে দৃশ্যপট এঁকে সংক্ষিপ্ত তথ্য লিখছেন। সেই তথ্যগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডও করছেন। এসপি’র চোখে ভিন্নভাবে কোচবিহার দর্শনের কার্টুন সাড়া ফেলেছে। এককথায় কোচবিহার গ্রাফিক্স নভেল বানাচ্ছেন তিনি।
গ্রামগঞ্জ ঘুরে কাঁঠাল গাছ খুঁজে পেয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন ,কোচবিহার জেলা কাঁঠাল উৎপাদনে উত্তরবঙ্গে সেরা। সেই তথ্য তুলে ধরে কোচবিহারের কাঁঠালের কার্টুন এঁকেছেন ডায়েরিতে। ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী আব্বাস উদ্দিনেরও জন্ম কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জে। পরে ওপার বাংলায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। তবে তাঁর জন্মভিটা এখনও রয়েছে জেলায়। ঐতিহাসিক সেই স্মৃতি বিজরিত আব্বাস উদ্দিনের জন্মভিটে কার্টুনের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এসপি।
রথযাত্রার ডিউটির দিনে হয়েছে এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা। রথযাত্রা শেষে রাস্তাজুড়ে লটকার ছড়াছড়ি। পড়ে থাকা লটকা রাস্তা থেকে কুড়িয়ে খেয়েছেন তিনিও। বাংলাদেশের ধামরাই ও টাঙ্গাইলে রথের যাত্রায় লটকার প্রচলন আছে। এই রাজ্যে নবদ্বীপের পাশাপাশি কোচবিহারও একই প্রথা। রবি ঠাকুরের কবিতার লাইন দিয়ে রথযাত্রার কার্টুনের বর্ণনায় লটকা খাওয়ার কথাও লিখেছেন তিনি। অফিসের কাজে এক ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিমানে চেপে কলকাতা গিয়েছেন। পাইলটের পিছনে বসা সিটে এঁকেছেন সেই চিত্র। তাঁর জীবনে একসময়ে গল্পে পড়া সিঁধেল চোরের সন্ধান পেয়েছেন কোচবিহারে। এই জেলার অধিকাংশ বাড়ি টিনের। নীচে মাটি। সিঁধেল চোরেরা সহজেই সিঁধ কাটতে পারে এখানে। তাই এখনও সিঁধেল চোরের উপদ্রব রয়েছে। সেই কাহিনি ফুটে উঠেছে পুলিস কর্তার আঁকা কার্টুনে।