‘পাতালগঙ্গা’ দেখতে মন্দিরনগরী কালনায় ভিড় করে মানুষ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মন্দিরনগরী কালনা। প্রাচীন অম্বিকা দেবীর মন্দিরের জন্য এই জায়গাটির নাম অম্বিকা কালনা। সেখানেই রয়েছে ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের চরণাশ্রিত সিদ্ধ সাধক ভগবান দাস বাবাজির আশ্রম ‘ব্রহ্মবাড়ি’। সেখানেই রয়েছে ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের চরণাশ্রিত সিদ্ধ সাধক ভগবান দাস বাবাজির আশ্রম ‘ব্রহ্মবাড়ি’। এই আশ্রমের মূল আকর্ষণ ‘পাতালগঙ্গা’। পাতালগঙ্গাকে ঘিরে আজও ব্রহ্মবাড়ির আনাচেকানাচে ঘুরে বেড়ায় রোমহষর্ক এক কাহিনি।
অষ্টাদশ (১৮২৩) শতকের শুরুর দিকে কালনা শহরের ফটকদ্বার এলাকায় বাস করতেন ভগবান দাস বাবাজী নামে এক বৈষ্ণব সাধক। কালনা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী নদী। তিনি প্রতিদিন ভাগীরথী নদীতে স্নান করে তাঁর আরাধ্য দেবতা রাধাগোবিন্দের পুজো করতেন। ঈশ্বরের নামগান ও সাধনাই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। কথিত আছে, বয়সের ভারে একসময় তিনি আর ভাগীরথী নদীতে স্নান করতে যেতে পারতেন না। মন টানে, শরীর সায় দেয় না। সেই সময় তিনি আরাধ্য দেবতার উদ্দেশে বলেন, ‘ঠাকুর, আমি তোমার নিত্য পুজোর আগে নদীতে স্নান করতে যেতে পারছি না। তুমি যদি আমার আশ্রমেই নদীস্নানের সুযোগ করে দাও, তাহলে পবিত্র ভাগীরথীর জলে স্নান করে তোমার পুজো অর্চনা করতে পারি।’
ভক্তের ডাকে সাড়া দিলেন ঈশ্বর। পরের দিনই আশ্রমে ঘটল এক অলৌকিক ঘটনা। আশ্রম প্রাঙ্গনে মাটি ফেটে বেরিয়ে এল জল। সেই জল একটু ঘোলা, ভাগীরথী নদীর মতোই। জলের মধ্যে মিশে ছিল ওই নদীর মতোই কচুরিপানা। সেই জল দেখে আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। সেই জলে স্নান করে রাধাগোবিন্দের পুজো দেন। বেশ খানিকটা জায়গা খুড়ে একটি কূপের (কুয়ো) ব্যবস্থা করেন। পরবর্তী সময়ে বর্ধমানের মহারাজারা এই মন্দির সংস্কার করেন। সেই কূপই আজ পাতাল গঙ্গা নামে পরিচিত। এক সময় কাছে থাকলেও এখন প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সরে গিয়েছে নদী। কিন্তু, আজও ভাগীরথী নদীর জল বাড়লে কূপের জল বাড়ে। তাতে এসে হাজির হয় কচুরিপানা। বর্ষায় নদীর জল ঘোলা হলে কুপের জলও ঘোলা হয়। জোয়ার-ভাটা খেলে সেখানে।