রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে হ্রাস পেয়েছে বিপুল সংখ্যক স্থায়ী কর্মী, প্রশ্নের মুখে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে বন্ধ নিয়োগ প্রক্রিয়া। পূরণ হচ্ছে না হাজার হাজার শূন্যপদ। এর মাঝে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্থায়ী কর্মীদের অবসর। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কর্মী সংখ্যা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কমে গিয়েছে ১১ হাজারের বেশি। যার ফলে বর্তমান কর্মীদের উপর বাড়ছে কাজের চাপ, আর তার সাথে সাথে গ্রাহক পরিষেবার মানও ক্রমশ নিম্নগামী। এই কর্মী সংকোচন বিষয়ে তাঁদের সংগঠনও সোচ্চার হয়েছে।
৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আর্থিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক বছরে কর্মী কমেছে ১১ হাজার ১৫৪ জন। ব্যাঙ্ক সংগঠনের মতে, সবেচেয়ে বেশি কর্মী হ্রাস পেয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায়। এখানে কর্মী কমেছে ৩ হাজার ৫৬২ জন। ব্যাঙ্ক অব বরোদা কমেছে ২,৬০৭ জন।
আরবিআই রিপোর্ট বলছে, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে মোট কর্মী সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ লক্ষ ৬০ হাজার। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ ৫৭ হাজার।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির বক্তব্য, প্রযুক্তিগত উন্নতির অজুহাত দিয়ে কর্মী সংকোচন চালাচ্ছে দেশের ব্যাঙ্কগুলি। তাদের দাবি, উন্নত প্রযুক্তির নাকি সুফল পাচ্ছেন গ্রাহকরা। তাই কর্মী সংখ্যা হ্রাস পেলেও গ্রাহকরা সমস্যায় পড়বে না। এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে ব্যাঙ্কগুলিতে‘অ্যাপ্রেন্টিস’ নিয়োগ করা হচ্ছে কেন?
সংগঠন আরও দাবি যে, ২০০৬-০৭ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে কর্মী কমেছে ৫২ হাজার। সাব-স্টাফ কমেছে ৫৯ হাজার। লোয়ার-স্টাফ কমেছে ১ লক্ষ ১১ হাজার জন। এই বিপুল সংখ্যক স্টাফদের ঘাটতিতে সমস্যা টের পাচ্ছেন গ্রাহকরা। তাছাড়া, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে বাৎসরিক চুক্তির ভিত্তিতে যে কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে তাতে নেই কোনও সামাজিক সুরক্ষা। এছাড়াও সেখানে নেই অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা। একজন স্থায়ী ব্যাঙ্ককর্মীর বেতনের ধরাছোঁয়ার বাইরে তাঁদের বেতন। দেশজুড়ে ব্যাঙ্কিং শিল্পে প্রায় ২৮ লক্ষ কমিশনের ভিত্তিতে ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’ নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতেই ২ লক্ষ ৩০ হাজার মিত্র রয়েছেন। তাদের বেতনের কোনও স্থিরতা নেই। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কর্মীদের স্বার্থবিরোধী নীতি, ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।