শুরু হয়ে গেল পিতৃপক্ষ, দেবীপক্ষের অপেক্ষা দীর্ঘ এই বছর
মহালয়ার সকাল মানেই পুজো এসে যাওয়া। আকাশে পেজা তুলোর মত মেঘ, কাশফুল, শিউলিফুল, চারপাশে পুজো পুজো ভাব। কিন্তু এবার আর তা হচ্ছে না। কারণ এবার মহালয়ার পরে পুজোর জন্য অপেক্ষা করতে এক মাসেরও বেশি সময়।
পঞ্জিকা বলছে বুধবার সকাল ৯টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত ছিল পূর্ণিমা। অর্থাৎ, তার পর মুহূর্ত থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে পিতৃপক্ষ। চলবে এক পক্ষ অর্থাৎ ১৫ দিন। শেষ হবে ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার দিন। সেদিনই আবার বিশ্বকর্মা পুজো। সাধারণ ভাবে পিতৃপক্ষের অবসানে শুরু হয়ে যায় দেবীপক্ষ। কিন্তু এবার সেটা হচ্ছে না। অপেক্ষা করতে হবে গোটা আশ্বিন মাস। দেবীপক্ষ শুরু হবে ১৭ অক্টোবর। ৩০ আশ্বিন, শনিবার। আর দেবীর বোধন, ২২ অক্টোবর ষষ্ঠী তিথিতে।
তবে পঞ্জিকা যাই বলুক বিষয়টা বড়ই খাপছাড়া লাগবে। বাংলায় দুর্গাপুজো তো মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায়। বাঙালির যেন তর সয় না। ইদানীং, অনেক পুজো মণ্ডপে তো মহালয়ার আগেই শুরু হয়ে যায় দেবী দর্শন। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে চলে উদ্বোধনের পালা। করোনা আবহে এই বছরে এমনিতেই উৎসব পালন কতটা করা যাবে তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। তবে অনেকে মনে করছেন, পঞ্জিকা কিছুটা সুবিধাই করে দিয়েছে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে পুজো হওয়ায় করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে পারে। আর তাতে কিছুটা হলেও উৎসবে মেতে ওঠা যাবে।
পঞ্জিকা অনুসারে, অমাবস্যার পরেই শুরু হয়ে যায় দেবীপক্ষ। কিন্তু আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর অমাবস্যার পরে সেটা হবে না। কারণ, এবার আশ্বিন মল মাস। কোনও মাসে ৩০ দিনের মধ্যে দু’টি অমাবস্যা তিথি পড়লে তাকেই বলে মল মাস। সনাতন বিশ্বাস অনুযায়ী, এমন মাসে কোনও শুভ কাজ করা যায় না। এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক পণ্ডত নবকুমার ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “মল মাস বিষয়টি নতুন কিছু নয়। এটা বছরের যে কোনও সময়েই পড়তে পারে। তবে এই সময়টাতে কোনও শুভকাজ বা পুজো হয় না। ফলে যে বছর আশ্বিন মাসে এমন হয়, সে বছরই এই নিয়ম মানা হয়। সে কারণেই এবার দুর্গাপুজো মহালয়ার পর এতটা পিছিয়ে যাচ্ছে। পরের যে অমবস্যা তা ২৯ আশ্বিন, ১৬ অক্টোবর। সুতরাং, তার পরের দিন থেকে শুরু হবে দেবীপক্ষ।”