দেবাশিস চক্রবর্তীর চোখের বিচারের দাবিতে সরব পুলিশ, কী বলছে কলকাতা পুলিশ?
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: বুধবার সকাল থেকে রাজ্যজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশের নীরব প্রতিবাদ চলল। হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে সাদা উর্দিতে রক্তাক্ত অসহায় পুলিশ অফিসারের একহাতে চোখ আগলে রাখার ছবি। কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী নবান্ন অভিযানে ‘ছাত্র সমাজে’র ছোঁড়া ইটের আঘাতে সম্ভবত চিরকালের মতো দৃষ্টি হারাতে বসেছেন। লালবাজার জানিয়েছে, দেবাশিসের বাম চোখের রেটিনা এবং কর্নিয়া দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত। কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য হায়দ্রাবাদে পাঠানো হবে তাঁকে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, আহত পুলিশ অফিসারের চিকিৎসায় যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে রাজ্য। তাঁর উপর হামলার ঘটনায় দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সরকারি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে এমন মর্মান্তিক পরিণতি এক লহমায় মিলিয়ে দিয়েছে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশকে। বুধবার হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুক খুললেই ভেসে এসেছে সাদা উর্দিতে রক্তাক্ত অসহায় দেবাশিসের একহাতে চোখ আগলে থাকা ছবিটা।
মুকুন্দপুরের হাসপাতালের বেডে বসে ভিডিওবার্তায় দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, “মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানে ডিসি (ইস্ট) অরিশ বিলালের টিমে ছিলাম। ডিসির নির্দেশে ১১ নম্বর ফার্লং গেট থেকে বাবুঘাটের দিকে যাচ্ছিলাম আমরা। আচমকাই রেড রোডে পুলিসের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। প্রথম ইটটাই গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনের কাঁচ ভেঙে আমার চোখে এসে লাগল। বাঁ চোখ থেকে অঝোরে রক্ত পড়ছিল। তারপর আর ওই চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছি না। রাতেই জরুরি ভিত্তিতে চোখে অপারেশন করা হয়েছে। জানি না আর কোনও দিন ওই চোখে দেখতে পাব কি না!”
তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত জাভালগি থেকে দার্জিলিং রেঞ্জের ডিআইজি জয়িতা বোস, রায়গঞ্জ রেঞ্জের ডিআইজি সুধীর কুমার নীলকান্তম থেকে কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা—সবার হোয়াটসঅ্যাপের ‘ডিসপ্লে পিকচার’ এদিন দেবাশিসের রক্তাক্ত ছবি। পুলিশের কর্তাদের কোনও নির্দেশ ছিল না। সহকর্মীর রক্ত ঝরতেই পদের ভেদাভেদ ভুলে একাকার কনস্টেবল থেকে আইপিএস।