পুলিশের উর্দি ছেড়ে স্কুল শিক্ষক, শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন চ-বলয়ের ‘জয়ব্রত স্যার’
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: খাঁকি উর্দি পরে কোমরে রিভলভার গুঁজে তিনটি বছর কাটিয়েছেন। তবে পুলিশ সার্ভিসে মন টেকেনি। তাই শিক্ষকতার পেশায় যোগ দেন জয়ব্রত ভট্টাচার্য। ২২ বছর শিক্ষকতা করে শিক্ষারত্ন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন জয়ব্রত। তাও আবার নিজের শৈশবের হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে।
প্রায় ২২ বছর হয়ে গেল বীরপাড়া হাইস্কুলে শিক্ষকতা করছেন জয়ব্রত ভট্টাচার্য।
দু’দশক ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য এবার তিনিই আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে শিক্ষারত্ন সম্মানের জন্য মনোনীত হয়েছেন। ১৯৯৯ সালে রাজ্য পুলিশে যোগ দেন। সাব ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেন। এরইমধ্যে এসএসসিতে বসেন, পাশও করেন। এরপরই পুলিশের চাকরি ছেড়ে স্কুলে পড়ানো শুরু করেন। শিক্ষকতার প্রতি প্রথম থেকেই তাঁর একটা আবেগ ছিল। তাই সুযোগ আসার পর তা তিনি ছাড়েননি।
বীরপাড়া চা বলয়ে পড়ে। স্বভাবতই চা বলয়ের ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তোলাটাই তাঁর প্রধান চ্যালেঞ্জ।স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে তিনি নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছেন। জয়ব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “ইমেলে আমাকে জানানো হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে আমার জন্য আনন্দের। আমার ২২-২৩ বছরের শিক্ষক জীবনে যেটুকু অবদান আমার ছাত্র ছাত্রীদের জন্য রাখতে পেরেছি, সেটার স্বীকৃতি হিসাবেই আমি এটাকে দেখছি। এই স্বীকৃতি আমার একার না, সমগ্র সমাজের।”
জয়ব্রত ছবির মতো করে সাজানোর চেষ্টা করেছেন স্কুলের ভবনটি। ছোটদের ক্লাসরুমের সামনে নন্টেফন্টে, ছোটা ভিম সহ নানা কার্টুন চরিত্র আঁকা। বড়দের ক্লাসরুমের সামনে ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান সংক্রান্ত পাঠ্যসূচির নানা ছবি। শিক্ষারত্ন পুরস্কারের কথা জানার পর বৃহস্পতিবার স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং প্রাক্তনীরা সংবর্ধনা দেন তাঁকে। পড়ুয়া এবং সহকর্মীদের জন্য শিক্ষারত্ন পুরস্কারটি উৎসর্গ করেছেন জয়ব্রত।