JEE-NEET মামলার শুনানি আজ
জেইই-মেনের অর্ধেক দিনের পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শেষ। অথচ করোনার তাণ্ডবে পড়ুয়াদের একাংশ ওই পরীক্ষায় বসতেই পারছেন না বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে সর্ব ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা জেইই-মেন এবং ডাক্তারি প্রবেশিকা নিট-ইউজি পিছোতে দায়ের করা মামলায় শুনানির দিন ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, পরীক্ষা পিছোতে করা ওই আবেদনের শুনানি শুক্রবার হবে বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চে।
করোনা-কালে পড়ুয়াদের অসুবিধা মাথায় রেখে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে ২৮ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টে ‘পিটিশন’ দাখিল করেছিলেন ছয় রাজ্যের ছয় ক্যাবিনেট মন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বাকি পাঁচ রাজ্য ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, পঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্র। স্বাভাবিক ভাবেই জেইই এবং নিটের প্রায় ২৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের নজর থাকবে এই শুনানির দিকে। নিটের জন্য ঘোষিত দিন ১৩ সেপ্টেম্বর। কিন্তু ১ তারিখ থেকে শুরু হওয়া জেইই শেষ হওয়ার কথা ৬ তারিখে।
অর্থাৎ, অর্ধেক দিনের পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শেষ। তাই তার ক্ষেত্রে যাঁরা পরীক্ষায় বসেছেন এবং যাঁরা দিতে পারেননি— উভয় তরফের কথাই শুনানিতে ওঠার সম্ভাবনা।
জেইই-র পরীক্ষা তিন দিন গড়ানোর পরেও অবশ্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিরাম নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, জেইই-মেনের প্রথম দিনে পশ্চিমবঙ্গে পরীক্ষায় বসতে পেরেছেন মাত্র ২৫% পরীক্ষার্থী। তাঁর অভিযোগ, ৭৫% পড়ুয়া এমন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় বসতেই পারলেন না কেন্দ্রের জেদ, অহঙ্কার আর একগুঁয়েমির জন্য।
পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় দিনেও পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে অনেক অভিভাবককেই যথেষ্ট বেগ পেতে হল। মেদিনীপুর থেকে গাড়ি ভাড়া করে ছেলেকে নিয়ে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রে এসেছেন প্রদীপ রায়। গাড়ি ভাড়া করে ছেলেকে নিয়ে খড়দা থেকে এসেছেন সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়। চম্পাহাটি থেকে ছেলেকে নিয়ে ভাড়ার গাড়িতে এসেছেন কৃষ্ণমোহন নস্কর। তবে অভিভাবকেরা সবাই জানালেন, পরীক্ষা হবে কবে হবে এই টানাপড়েনের মধ্যে থাকতে গিয়ে তাঁদের ছেলেমেয়েদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তাই একদিকে পরীক্ষা হওয়ায় ভাল হয়েছে। এ দিন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে রাস্তায় ও ফুটপাতে বেশ কয়েকটি ব্যবহার করা মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে ওই তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের দাবি, রাস্তায় কোথাও মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা তুলে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবর টুইট করেছেন অসমের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বোরা। সেখানে দাবি, অসমে অর্ধেকেরও কম পরীক্ষার্থী শেষ পর্যন্ত বসতে পেরেছেন জেইই-মেনে। সেই খবর উল্লেখ করে রিপুনের দাবি, “নিশঙ্কজি, বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীর চুপ করে থাকার ‘তত্ত্ব’ ঠিক। এখন আমাদের মুখে টুঁ শব্দ নেই। কিন্তু ভোটের দিনে কিন্তু সেই (বিরোধিতার) স্বর চড়বে।” উল্লেখ্য, জেইই শুরুর আগে প্রবল বিতর্ক এবং একাধিক ছাত্র সংগঠনের প্রতিবাদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের দাবি ছিল, অধিকাংশ পড়ুয়াই চান যে, পরীক্ষা হোক।
কিন্তু তাঁরা চুপ থাকায় নজরে পড়ছেন শুধু প্রতিবাদীরাই। এনএসইউআই-সহ একাধিক ছাত্র সংগঠনের দাবি, যাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারছেন না, ফের এক বার সুযোগ দেওয়া হোক তাঁদের।
রাতে সরকারের তরফে তিন দিনের একটি তালিকা প্রকাশ করে দাবি করা হয়েছে, প্রথম দিন ৫৪ শতাংশ প্রার্থী পরীক্ষায় বসলেও বুধ ও বৃহস্পতিবার যাথাক্রমে ৮১ এবং ৮২ শতাংশ প্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। সরকারের ইঙ্গিত, প্রথম দিনে আর্কিয়োলজি ও প্ল্যানিং-এর প্রবেশিকা পরীক্ষা থাকায় হয়তো পড়ুয়াদের আগ্রহের অভাব ছিল।