দূরের জেলা থেকে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে নাজেহাল হতে হচ্ছে রোগীদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এস এস কে এমে শিশুকন্যাকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে হয়রান মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির বজলু শেখ। পরিষেবা পেতে সটান পৌঁছলেন অবস্থান মঞ্চে, নেতার খোঁজে। মঞ্চে গিয়ে আন্দোলনকারী নেতার খোঁজ করলেন। কয়েকজনের কাছে জানতেও চাইলেন। কিন্তু কোনও সদুত্তর না পেয়ে অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে আরও অসহায় পেশায় কৃষক বজলু। অসহায়তা একসময় পাল্টে যায় ক্ষোভে।
কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা যায় বজলু একা নন। তাঁর মতোই ক্ষুব্ধ আরও অনেকে। তাঁরা সবাই মিলে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। বজলু চিৎকার করে উঠলেন, ‘নেতাও নেই। একটা ওষুধের জন্য এই নিয়ে তিন বার এলাম। মেয়ের গলায় অসুখ। খুব ব্যথা। এর চেয়ে তো প্রাইভেটে দেখিয়ে নিতে পারতাম। এখানে আসতেই ৬০০ টাকা চলে গেল। এসব কি বন্ধ হবে না?’
এস এস কে এমের থেকেও সঙ্গিন অবস্থা আর জি করের। একের পর এক রোগী আসছেন ইমারজেন্সিতে। কেউ যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছেন। কেউ ইমারজেন্সিতে গিয়ে দৌড়তে দৌড়তে ছুটছেন ট্রমা কেয়ারে। ট্রলিতে বাবাকে শুইয়ে অসহায়ভাবে তাকিয়ে ছেলে। ‘কী হয়েছে?’ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে বললেন, ‘অ্যাকসিডেন্ট! তাও ভর্তি নিচ্ছে না হাসপাতাল।’ ছেলের নাম মহম্মদ সুলতান। বললেন, ‘কাশীপুরে বাবাকে রাস্তায় গাড়ি ধাক্কা মারে। প্রথমে ওপিডিতে দেখল। বলল, ভর্তি করাতে হবে। তারপর ট্রমা কেয়ার থেকে বলল, ডাক্তার নেই। মা এখন থানায় গিয়েছে কথা বলতে। এভাবে আর কতদিন চলবে কে জানে!’
হাসপাতালে অপেক্ষা করতে করতে হয়রান হয়ে ফিরে গেলেন বারাসতের ফাজিলা বেগম। ছেলে শরিফ আহমেদ কিডনি ও লিভারের চিকিৎসার জন্য মাকে ভর্তি করতে এসেছিলেন আর জি করে। শরিফ বললেন, ‘হাসপাতাল সোজা বলে দিল ভর্তি হবে না। এন আর এসে নিয়ে যাচ্ছিলাম। একজন বলল, সেখানেও একই অবস্থা। কিছুতেই ভর্তি নেবে না। এখন কী করব? বাড়ি নিয়ে চলে যাচ্ছি।’ শরিফের প্রশ্ন, ‘সিবিআই এতদিন ধরে কী করছে? বিচার কবে পাওয়া যাবে? আমাদের ভোগান্তিরই বা কবে শেষ হবে?’ আর জি করেরই প্রতিচ্ছবি দেখা গেল এসএসকেএম হাসপাতালেও।