মেট্রোর কাজের জন্য তাঁদের আর কত যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে! ধৈর্য হারাচ্ছেন দুর্গাপিতুরির বাসিন্দারা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন গোটা শহর। হঠাৎই ৯ নম্বর দুর্গা পিতুরি লেনের এক সদর দরজায় সজোরে কড়া নাড়ার শব্দ। অতীতেও বার তিনেক এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে বলে সিঁদুরে মেঘ দেখলেন অমিত সেন। হন্তদন্ত হয়ে দরজা খুলতেই ফের মাথার বাজ। মেট্রো কর্মীদের মুখে জানতে পারলেন, বাড়ির নীচে মেট্রো টানেল থেকে হুড়হুড় করে জল ঢুকছে। এক্ষুণি বাড়ি ছাড়তে হবে। অমিতবাবুর মতো আশপাশের প্রায় ১১টি পরিবারের ৬০ বাসিন্দাকে এভাবেই মধ্যরাতে সঞ্চয়-সম্বল ফেলে এক কাপড়ে বেরিয়ে আসতে হয়। ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট এবং ২০২২ সালের ১০ মে ও ১৪ অক্টোবর এভাবেই ঘরছাড়া হওয়ার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল স্থানীয়দের। বারবার একই ঘটনার সামনে পড়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরা। দুর্গাপুজো প্রাক্কালে জীবন যন্ত্রণা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল তাঁদের। এর জেরেই এদিন দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা।
অমিত সেন বলেন, ‘এত কিছুর পরও মেট্রো রেলের সঙ্গে সমস্ত সহযোগিতা করছি আমরা। রেলের অনুরোধ মেনে ২৭ আগস্ট থেকে আমরা বাড়ির বাইরে। মাটির তলায় কাজ হবে বলে আমরা স্থানীয় একটি হোটেলে ছিলাম। মেট্রোর তরফে লিখিতভাবে কাজ শেষের নোটিশ দেওয়া হয় আমাদের। সেই মতো সোমবার আমরা ঘরে ফিরে আসি। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের টানেল থেকে জল বেরয় কী করে?’
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধে সামিল হন স্থানীয়রা। তারপর মেট্রো রেলের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সশরীরে আসতে হবে দুর্গতদের সঙ্গে বৈঠক করতে, এই দাবিতে সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে স্মার্ট গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তারপর বিকেলে কেএমআরসিএলে’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর এলাকায় গিয়ে ঘরছাড়াদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রেলকর্তার কাছে ছ’দফা দাবি পেশ করেন বাসিন্দারা। শুক্রবার রেলের তরফে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।