শিবপুরের রাজবাড়ির দুর্গা পুজোর রয়েছে এক ইতিহাস, যা শুনলে অনেকেই অবাক হবেন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৬৮৫ সাল অর্থাৎ ১০৯২ বঙ্গাব্দে হাওড়ার শিবপুরের রাজবাড়িতে শুরু হল দুর্গাপুজো। পদ্মাবতী রূপে এখানে পুজো দুর্গার। ৩৩৯ বছর ধরে সেই পুজো করে চলেছেন রাজার বংশধররা। এ বাড়ির গৃহদেবতা ব্যাতাই চণ্ডী। তিনি প্রতিষ্ঠিত এই এলাকার একটি মন্দিরে। পুজোর তিন দিন পারিবারিক রীতি মেনে প্রচলিত রয়েছে পাঁঠা বলির প্রথা।
বিসর্জনের সময় দেবী দুর্গার মাথার মুকুট পরানো হয় গৃহদেবতাকে। বেলুড় মঠে যে রীতিতে পুজো হয় সেই নিয়মেই রায়চৌধুরী বাড়িতে পুজিতা দেবী দুর্গা। ষষ্ঠীর অনেক আগেই হয় বোধন। তারপরই শুরু হয়ে যায় পুজো। বাড়ির দুর্গা দালানের পাশের ঘরে রয়েছে একটি বেলগাছ। সেই বেলঘরে রাখা হয় দুর্গার ঘট। পুজোর চার দিন দেবীর মূর্তির পাশাপাশি পুজো করা হয় মূল ঘটটিকেও। দশমীর দিন ঘট বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে দেবীর মাথার মুকুট এনে পরানো হয় কুলদেবতা ব্যাতাই চণ্ডীকে। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে হয় পাঁঠা বলি।
জানা যায়, রায়চৌধুরী বংশের রাজকন্যা রাজবাড়ির কাছে একটি পুকুরের সামনে রোজ খেলা করতে যেত। পদ্মাবতী নামের একটি মেয়ে আসত। সে ছিল রাজকন্যার খেলার সঙ্গী। রাজা এসব কিছু জানতেন না। একদিন রাজা রামব্রহ্ম রায়চৌধুরী বিষয়টি জানতে পেরে রাজকন্যার খেলার সঙ্গীর খোঁজ করেন। ডেকে পাঠান মেয়েটিকে। তবে রাজার নির্দেশ পেয়েও রাজ দরবারে যেতে অস্বীকার করে পদ্মাবতী। আদেশ অমান্য করায় বেজায় রেগে যান রাজা। ধরে আনতে পেয়াদাদের পুকুর পাড়ে পাঠান। পেয়াদারা যায়। কিন্তু একটি শিশুর পায়ের ছাপ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না। সেই রাতেই রামব্রহ্ম স্বপ্নাদেশ পান। পদ্মাবতী স্বপ্নের মধ্যে এসে রাজাকে জানান, ‘তিনিই আসলে দেবী দুর্গা। রাজকন্যার বন্ধু হয়ে দুপুরে খেলতে আসেন পুকুর পাড়ে।’