কৃষ্ণনবমী থেকে চাঁচলের রাজবাড়ির পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কৃষ্ণনবমী অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকেই চাঁচলের রাজবাড়ির পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ল। মালদহের চাঁচল সদরের পাহাড়পুরে সতীঘাট থেকে তামার কলসে জল ভরে চণ্ডীদেবীর দালানে আনা হয়। থানের পাশেই স্থাপন করা হয় মঙ্গলঘট। রীতি মেনে পুজো শুরু করেন রাজ পুরোহিত সৌমিত্র চক্রবর্তী ও অচিন্ত্য মিশ্র।
উত্তর মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকার রাজা ছিলেন রামচন্দ্র রায় চৌধুরী। তাঁর রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল বিহারের কিছু অংশ। প্রজাদরদি এই রাজার খ্যাতি ছিল পূর্ব ভারতজুড়ে। কথিত আছে, দেবী চণ্ডীর স্বপ্নাদেশে রাজা চাঁচলের মহানন্দা নদীতে স্নান করতে গেলে তাঁর হাতে উঠে আসে চতুর্ভূজা অষ্টধাতুর মূর্তি। সেটি সতীঘাট থেকে দুই কিমি দূরে চাঁচল রাজবাড়িতে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন থেকেই শুরু হয় চণ্ডীদেবীর নিত্যপুজো।
পরবর্তীকালে রাজবংশের অন্যতম রাজা শরৎচন্দ্র রায় চৌধুরীর নির্দেশে তৎকালীন ম্যানেজার সতীরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ি থেকে দুই কিমি দূরে পাহাড়পুরে পাকা মন্দির নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর সেখানে রাজবাড়ির চণ্ডীপুজো হতো। রাজা ও রাজপাট চলে যাওয়ার পর সেই পুজোর ভার নিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে ঐতিহ্যে বিন্দুমাত্র বদল হয়নি।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে সুদর্শন দাস ও সঞ্জীব ঋষিরা জানালেন, চণ্ডীমণ্ডপের পুজোর উত্তরবঙ্গ জুড়ে খ্যাতি রয়েছে। সপ্তমীর ঊষালগ্নে রাজ ঠাকুরবাড়ি থেকে ঢাকঢোল বাজিয়ে রুপোর ছাতা, পাখা ও সোনার ঝাড়ু সহকারে অষ্টধাতুর চতুর্ভূজা চণ্ডীর বিগ্রহ নিয়ে আসা হয় পাহাড়পুরে মণ্ডপে। কয়েক হাজার ভক্ত সমাগম ঘটে এই শোভাযাত্রায়। সপ্তমী থেকে শুরু হয় পুজো। অষ্টমীতে রয়েছে কুমারী পুজোর চল। দশমীতে অষ্টধাতুর মূর্তি আবার ফেরত নিয়ে যাওয়া হয় চাঁচল রাজ ঠাকুরবাড়িতে। সেখানেই সারা বছর চলে পুজো। দশমীর গোধূলি লগ্নে মহানন্দা নদীর পূর্বপাড়ের সতীঘাটে চতুর্ভূজা চণ্ডীর মৃন্ময়ী প্রতিমার নিরঞ্জন হয়।