রাজস্থানী ঘরানার ঘাগরা চেলিতে, পাট ও মাটির সাজে দুর্গা প্রতিমা নজর কাড়বে দমদমের বিভিন্ন মণ্ডপে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এবার পুজোয় দমদমের বিভিন্ন মণ্ডপের মতো চমক রয়েছে প্রতিমাতেও। সাবেকি প্রতিমার পাশাপাশি কোথাও মা সেজেছেন রাজস্থানী ঘরানার ঘাগরা চেলিতে, কোথাও পাট ও মাটির সাজে মায়ের স্থিতধী রূপ নজর কাড়বে দর্শনার্থীদের।
দক্ষিণ বেদিয়াপাড়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো এবার ৩৫ বছরে পা দিয়েছে। এবার তাদের থিম রাজস্থানের ঘুমরের ঘটা। রাজমহলের আদলে বিশালাকার মণ্ডপ দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে। মণ্ডপের পরতে পরতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রাজকীয় বৈভব। রাজস্থান থেকে আনা সুদৃশ্য কাপড় দিয়ে তৈরি হয়েছে নানা কারুকাজ। রাজবাড়ির সামনে দেখা মিলবে পাইক, বরকন্দাজ ও উটের সারির। হারমোনিয়াম হাতে উস্তাদের ছবিও নজর কাড়বে। এছাড়া নৃত্যরতা মহিলা, সৈন্য সামন্ত দিয়ে সেজে উঠেছে মণ্ডপ।
থিমের সঙ্গে সাজুয্য রেখে মা আসবেন রাজস্থানী সাজে। ঘাঘরা-চেলিতে সেজেছেন মা দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। কার্তিক ও গণেশও পরেছেন রাজস্থানী পাঞ্জাবি। ঘুমর নৃত্যকে ফুটিয়ে তুলতে সুদূর রাজস্থান থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে ছ’জন শিল্পীকে। তাঁরা মণ্ডপের সামনে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ঘুমর নৃত্য পরিবেশন করবেন। পুজো কমিটির মুখ্য সংগঠক তথা দক্ষিণ দমদম পুরসভার সিআইসি সদস্য মৃন্ময় দাস বলেন, রাজস্থানের ভিল উপজাতি প্রথম সরস্বতী আরাধনায় এই নৃত্য পরিবেশন করেছিল। এই নাচের পাশাপাশি রাজস্থানের রাজমহলের চিত্রও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সংযুক্ত অমরপল্লি বাস্তুহারা সমিতি পরিচালিত সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবার ৭৫ বছরে পা দিয়েছে। কলকাতার ঐতিহ্যবাহী স্টার থিয়েটারের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। এই মণ্ডপে মা আসবেন সাবেকি সাজে। মণ্ডপের সামনে নটী বিনোদিনী, রামকৃষ্ণের সাজে আসবেন শিল্পীরা। আবার মণ্ডপ থেকে বের হওয়ার সময় বিখ্যাত নাটক ও যাত্রার জনপ্রিয় সংলাপ ও দৃশ্য ফুটিয়ে তুলবেন কলাকুশলীরা। পুজো কমিটির মুখ্য সংগঠক অমিত পোদ্দার বলেন, কলকাতার নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নতুন প্রজন্ম ভুলতে বসেছে। সংস্কৃতির শিকড়ের টানে তাই স্টার থিয়েটারের ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সাতগাছির বিবেক সঙ্ঘের পুজো এবার ৭৪ বছরে পা দিয়েছে। তাদের থিম ‘বহ্নিশিখা’। হাজারো প্রদীপে সেজে উঠেছে মণ্ডপ। আলোর কারিকুরিতে মায়ের উজ্জ্বল মুখ বহ্নিশিখার মতো উজ্জ্বল। পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ সায়ন সাহা বলেন, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি নিরসনে সমাজ কুসুমাস্তীর্ণ হবে। অসুররূপী মনের অন্ধকারের বিসর্জন হতে পারে অন্তরে আলোয়। প্রদীপের শিখার ন্যায় উজ্জ্বল আলোর তেজ মনের সমস্ত অন্ধকার দূর করবে।