স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেন ফলতার নগেন্দ্র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: স্বাধীনতার আগে ১৯৪৪ সালে ফলতার বেলসিংহার বেনেপাড়ার নগেন্দ্র ভবনে মা দুর্গার পুজো শুরু করেন নগেন্দ্রনাথ দাস। এর পিছনে রয়েছে একটি কাহিনী। মাঝরাতে ঘুমটা ভেঙে গেল নগেন্দ্রনাথ দাসের। বেড়ার দেওয়ালের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে চাঁদের আলো এসে অন্ধকার ঘরে ঝিলিক দিচ্ছে। বাইরে একটানা ঝিঁঝিপোকারা সুর তুলছে। কাঠের খিল তুলে দরজা খুলে বারান্দা পেরিয়ে গোবর নিকানো মাটির উঠোনে নামলেন নগেন্দ্র। চারপাশ নিঝুম। জোনাকির আলো গাছপালার গায়ে, মাথায় জ্বলছে, নিভছে। আচমকা কিছুটা তফাতে ঠাকুরদালানের মাথায় চোখ পড়তেই চমকে উঠলেন। মাতৃসমা এক সুন্দরী মহিলা সাজগোজ করে সেখানে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে কী একটা যেন রয়েছে। ঘুম চোখে বেরিয়েছেন বলে বোধহয় ভুল দেখছেন– এমনটাই প্রথমে নগেন্দ্রবাবুর মনে হল। ফের ভালো করে তাকালেন। না, কোনও ভুল নয়। চাঁদের আলোয় স্পষ্ট এক মহিলা ঠাকুরদালানের খড়ের ছাউনি দেওয়া ছাদের মাথায় হেঁটে বেড়াচ্ছেন।
এবার রীতিমতো ভয় পেলেন নগেন্দ্র। অশরীরী হতে পারে মনে করে ভয়ে কাঁপতে লাগলেন। কোনওরকমে ঘরে ঢুকে দরজা দিয়েই বিছানায় শুয়ে পড়লেন। পরদিন সকালে বাড়ির সকলকে বিষয়টি জানালেন। একদিন পর রাতে স্বপ্ন দেখলেন তিনি। মা দুর্গা বলছেন, নগেন্দ্র, মাঝরাতে আমিই এসেছিলাম। তোর কাছে পুজো চাই। আমাকে ঠাকুরদালানে নিয়ে আয়।
একচালার মহিষাসুরমর্দিনীর মূর্তি। দাসবাড়ির এই পুজোয় মাকে সব নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়। আমিষ নৈব নৈব চ। শুধু তাই নয়, পুজোর ক’দিন বাড়ির সকলেও নিরামিষ আহার করেন। একমাত্র দশমীর পর বাড়ির সদস্যরা মাছ মুখে তোলেন। এখানে পাঠা বলিও নিষিদ্ধ। বদলে আখ, চাল কুমড়ো ও লাউ বলি হয়।