দীপান্বিতায় নয় জাঙ্গিপাড়ার আঁটপুর আনরবাটিতে কালীপুজো হয় চতুর্দশী তিথিতে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হুগলি জেলাজুড়ে অজস্র বিখ্যাত কালীপুজো রয়েছে, জাঙ্গিপাড়ার আঁটপুর আনরবাটি গ্রামের কালীপুজোও খুব বিখ্যাত। কিন্তু এখানে অমাবস্যায় নয়, চতুর্দশী তিথিতে হয় কালীপুজো। শ্যামা কালীপুজোর দিন, অমাবস্যায় গ্রামে কোনও পুজোই হয় না।
গ্রামের বড় কালী ছাড়াও রয়েছেন মা ন্যাড়া কালীর পুজো। দেবীর মাথায় চুল থাকে না। প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো আনরবাটি বারুইপাড়ার ন্যাড়া কালীপুজো। দীপান্বিতা অমাবস্যার পরিবর্তে এখানে পুজো হয় চতুর্দশীতে। কথিত আছে, এক সময়ে গ্রামে মহামারী দেখা দিয়েছিল। বর্ধমানের রায়নার এক ব্রাহ্মণ এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামের কলেরা মহামারী থেকে বাঁচতে চতুর্দশীতে কালীপুজোর বিধান দেন। তখন থেকে বড় কালী-সহ প্রায় আটটি পুজো হয় চতুর্দশীতে।
চতুর্দশীতে হওয়া প্রত্যেকটি কালীপ্রতিমা দক্ষিণ দিকে মুখ করে বসেন। আঁখ, ছাঁচি কুমড়ো, লেবু, আদা ও ছাগ বলি হয়। পুজোর দিন সকালে প্রতিমার গায়ে রঙের প্রলেপ পড়ে। নারকেলের সন্দেশ তৈরি করে প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়।
ন্যাড়া কালীপুজোকে ঘিরে শোনা যায়, দেবীর কাছে কেউ মনস্কামনা পূরণের আশা নিয়ে এসে কখনও বিফল হননি। শ্যামা কালীপুজোর আগের দিন চতুর্দশীতে এই পুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকে ভিড় করেন। অতীতে হ্যাজাক থেকে বা অন্য কোনওভাবে মূর্তিতে আগুন ধরে যায়। পুড়ে যায় দেবীর সাজ-সজ্জা-সহ চুল। দেবী স্বপ্নাদেশে পুরোহিতকে জানান, তাঁর মূর্তিতে যেন চুল ও সাজসজ্জা ব্যবহার করা না হয়। এরপর থেকে ন্যাড়া কালী নামে পরিচিত এই দেবী। দুই হাত বিশিষ্ট দেবী মূর্তির হাতে কোনও খাঁড়া থাকে না। এক হাতে পদ্ম, অন্য হাতে বাটি। পুজোর বয়স কারও জানা নেই। বংশপরম্পরায় পুজো দেখে আসছেন উদ্যোক্তারা।