কুলপুকুরের কালীকে ঘিরে রয়েছে রহস্যময় কাহিনি, জানেন?

বাসিন্দারা থমকে গেলেন। মায়ের পা ছুঁয়ে তাঁরা শপথ করে এসেছিলেন, নতুন দেশে পৌঁছে মন্দির গড়ে পুজো করবেন।

October 30, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার বাসিন্দাদের মুখে মুখে ফেরে কুলপুকুরের জাগ্রত কালী মার কথা। ‌আজও তাঁর মন্দিরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যানবাহনের গতি রহস্যময়ভাবে কমে যায়। গভীররাতে জাতীয় সড়কের ওপর শিশুকন্যা রূপে মা দেখা দেন। কুলপুকুরের কালী আজও ভক্তের কাছে জাগ্রত মা নামেই পরিচিত। দেশভাগের পর ওপার বাংলা থেকে ছিন্নমূল মানুষ এসে বাংলায় ঠাঁই নিয়েছিলেন। যশোর, খুলনা ও বরিশালের উদ্বাস্তু মানুষ বনগাঁ, গাইঘাটা, হাবড়া ও মধ্যমগ্রামের বিভিন্ন রিলিফ ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কথিত আছে, বরিশালের এক অচিন গাঁয়ের বাসিন্দারা সকলেই যখন দেশ ছাড়ছেন, পূজিত কালী মা তখন হাত নেড়ে তাঁদের পিছু ডাকলেন। মা তাঁদের বললেন, ‘তোরা সবাই চলে যাচ্ছিস। আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাবি না?’ বাসিন্দারা থমকে গেলেন। মায়ের পা ছুঁয়ে তাঁরা শপথ করে এসেছিলেন, নতুন দেশে পৌঁছে মন্দির গড়ে পুজো করবেন।

বরিশাল থেকে নিয়ে এসেছিলেন মায়ের ঘট ও থানের মাটি। উদ্বাস্তুরা সেদিন গাইঘাটায় যশোর রোডের পাশে পুকুরপাড়ের কুলগাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। মায়ের ঘট ও মাটি দিয়ে একচালা মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। শুরু হয়েছিল পুজোপাঠ। কেটে গিয়েছে বহু বছর। কুলগাছ ও পুকুরপাড়ের নাম অনুসারে কালী মায়ের মন্দিরের নামকরণ হয় কুলপুকুর মন্দির।

ফাল্গুনী অমাবস্যায় মায়ের অকালবোধন হয়। মন্দিরের গা ঘেঁষে চলে গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সড়ক যশোর রোড, ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। কুলপুকুর মন্দিরের কালী মাকে নিয়ে বহু কাহিনি শোনা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মন্দিরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আজও যানবাহনের গতি রহস্যময়ভাবে কমে যায়। জাতীয় সড়ক ধরে যাতায়াতের পথে দূরপাল্লার গাড়ির চালকরা গভীররাতে রাস্তার ওপরে কোনও শিশুকন্যাকে দেখেছেন। দেখেছেন বুড়িমা রূপে কালী মাকেও। হাত নেড়ে তাঁরা গাড়ি আস্তে চালানোর কথা বলছেন। ফাল্গুনী অমাবস্যায় দেবীর অকালবোধনের পুজো শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুরোহিতরা পথ ভুল করে ফেলেন। নির্জন মাঠের মধ্যে তাঁরা ঘুরপাক খান। মা তখন তাঁদের পথ দেখিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেন।

ভক্তদের বিশ্বাস, কুলপুকুরের কালী মা অত্যন্ত জাগ্রত দেবী। ভক্তের মনস্কামনা পূর্ণ করেন তিনি। মা কখনও কাউকে খালি হাতে ফেরার না। আজও মায়ের মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তের ভিড় জমে। তাঁর কাছে মানত করলে মা কখনও কাউকে খালি হাতে ফেরাননি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen