বিজেপি শাসিত অসমে পিএম কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি, ক্যাগ রিপোর্ট
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: বিজেপি শাসিত অসমে স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীর সাধের পিএম কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি ধরা পড়ল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (ক্যাগ) রিপোর্টে। আঙুল উঠেছে খোদ বিজেপির হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকারের বিরুদ্ধে। দুর্নীতির অঙ্কটাও চোখ কপালে ওঠার মতো—৫৬৭ কোটি টাকা।
ক্যাগ রিপোর্ট বলছে, অসমে এই প্রকল্পে ১৫ লক্ষেরও বেশি সুবিধাভোগীই আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য নয়। এমনকী তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশ ভুয়ো। এহেন ভুয়ো উপভোক্তার সংখ্যা মোট ১১,৩১,১৫২ জন। বাস্তবে তাদের কারও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। তাঁর অভিযোগ, কৃষকদের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছে অসমের বিজেপি সরকার।
এই তথ্য সামনে আসার পরে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, অনিয়মের অজুহাতে বিরোধী শাসিত বাংলায় ১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। অথচ তার উল্টো ছবি বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বারবার আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠলেও বরাদ্দ বন্ধ হচ্ছে না কেন?
কৃষকদের আর্থিকভাবে সহায়তার লক্ষ্যেই মোদি সরকারের এই প্রকল্প। প্রতি বছর তিন কিস্তিতে মোট ছ’হাজার টাকা সরাসরি চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠায় কেন্দ্র। অসম বিধানসভায় ক্যাগের যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে স্পষ্ট যে ডাবল ইঞ্জিন এই রাজ্যে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে। এর জন্য দায়ী প্রশাসনিক ত্রুটি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত পিএম কিষানের মূল্যায়ন করেছে ক্যাগ। দেখা গিয়েছে, এই সময়কালে ৪১,৮৭,০২৩টি আবেদনের মধ্যে ১০,৬৬,৫৯৩টি (প্রায় ২৫ শতাংশ) অযোগ্য। এমনকী, গত ২০২০ সালের মে-জুলাই মাসে অসম সরকারের তদন্তেই উঠেছে এসেছিল যে, ৩১,২০,৪৩০ জন অনুমোদিত সুবিধাভোগীর ৩৭ শতাংশই অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পিএম কিষানের টাকা পেয়েছেন।
বিজেপির হিমন্ত বিশ্বশর্মা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভুয়ো উপভোক্তাদের চিহ্নিত করা সত্ত্বেও টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়নি। ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ০.২৪ শতাংশ অর্থ ফেরত পাওয়া গিয়েছে। সেটুকুও অবশ্য হাতে পায়নি কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক। ক্যাগ সাফ জানিয়েছে, অযোগ্য উপভোক্তাদের অনেকেই কৃষক নন। সরকারী কর্মচারী, এমনকী পেনশনভোগীরা পর্যন্ত রয়েছেন সেই তালিকায়।