লোকাল ট্রেনের মতই কলকাতা মেট্রোয় নিত্যযাত্রীদের মিতালি
রাতের শেষ লোক্যাল ট্রেন, সকালের ফার্স্ট বাসে এমন বন্ধুত্ব অনেকই দেখা যায়। বিভিন্ন সময়ের ট্রেন বা বাসেও নিত্যযাত্রীদের এমন জমায়েত দেখা যায় প্রায়। বড়-ছোট সব শহরেই।
লোকাল ট্রেনের মতই এবার কলকাতা মেট্রোয় গড়ে উঠেছে নিত্যযাত্রীদের মিতালি। রাতের শেষ মেট্রো নজির হয়ে উঠছে শহরে এক নতুন বন্ধুত্বের ‘আস্তানা’ রূপে। গড়ে তুলছে এক নতুন ‘গ্রুপ’। মেট্রো শুধু আত্মহত্যা-আতঙ্কের নয়, আনন্দেরও। তারই যেন এক উপমা এই গ্রুপ। যে দলে রয়েছেন ষোলোজন যাত্রী-বন্ধু।
সমবয়স্ক নয়, ওঁরা সমমনস্ক। সেখানে নারায়ণ সাহা, শচীন ভোজ, সন্তোষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স ৬৮ থেকে ৭১, আবার তাপস সর্দার, সম্রাট হালদার, রাজেন মহাজনের বয়স ৩৩ থেকে ৩৯। কেউ পেশায় ব্যবসায়ী, কেউ চাকুরিজীবী। কেউ গৃহশিক্ষক, কেউ বা সেলুনকর্মী।
মিল একটাই। সকলেই থাকেন দক্ষিণ কলকাতায়, বিভিন্ন এলাকায়। অধিকাংশ ওঠেন যতীন দাস পার্কে। শেষ দিক থেকে দু’নম্বর কামরার প্রথম গেটে।
কেউ নামেন ‘মহানয়ক উত্তমকুমার’, ‘কবি নজরুল’। কেউ ‘মাস্টারদা’, ‘কবি সুভাষ’। রুজির টানে কাজ সেরে প্রতিদিন বাড়ি ফেরেন, উত্তর থেকে দক্ষিণে। রাতের শেষ মেট্রো চেপে। ওঠেন এক নির্দিষ্ট কামরায়। যেখানেই নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতা-গল্প, হাসি-মস্করা থেকে বন্ধুত্ব। আর সেই ভালোলাগার টানেই, তিন বছর তাঁরা গড়ে তুলেছেন অভিনব এক ‘মেট্রো গ্রুপ’!
প্রত্যেক বছর নিয়ম করে এনারা পিকনিকে যান। শুধু ষোলো জন নন। সঙ্গে যান দু’জন রাঁধুনিও। গত বছর আমরা দল বেঁধে গেছিলেন দীঘা। এই বছর জানুয়ারিতে পুরী। আর এখন থেকেই তৈরি হচ্ছেন পরের গন্তব্যের জন্য।