পথ দুর্ঘটনা রুখতে খুনের ধারা, বেসরকারি বাস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গত সপ্তাহে সল্টলেকে দুই বাসের রেষারেষির জেরে স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর পরেই ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে যৌথ ভাবে বৈঠক করে এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার বিধাননগরে এই সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক করেন দুই মন্ত্রী। বৈঠকে পরিবহণ আধিকারিক ও পুলিশকর্তাদের উপস্থিতিতে নতুন আদর্শ আচরণবিধি (এসওপি) তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই নতুন এসওপি অনুযায়ী, কমিশন প্রথা বিলোপের সঙ্গে যে কোনও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে বাসচালকের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের মামলা দায়ের করার মতো কঠোর পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে।
তারপর থেকেই বেসরকারি বাস পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। রাস্তায় বাস নামিয়ে জেলযাত্রার ভীতি ক্রমেই গ্রাস করছে সংশ্লিষ্ট মহলকে। ভয় কাটানোর পথ খুঁজতে আজ সোমবার কলকাতায় ৫০টি রুটের বাস মালিকরা আলোচনায় বসছেন। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা না-করলেও, এই রুগ্ন পরিবহণ শিল্পকে বাঁচাবার আশু সমাধান সূত্র বের করাই তাঁদের মূল লক্ষ্য। এই প্রসঙ্গে রবিবার সিটি সুবারবান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, মালিকরা বেপরোয়া ড্রাইভিং সমর্থন করেন না। বাসের রেষারেষি কখনোই কাম্য নয়। কিন্তু কলকাতা কিংবা জেলা স্তরে সংকীর্ণ রাস্তায় চূড়ান্ত মানসিক চাপ নিয়েই রোজ যাত্রীবোঝাই বাস চালাতে হয়। এ যেন চালকদের নিত্যদিনের পরীক্ষায় বসা! তাঁদের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলার মতোই, কিছু যাত্রী রীতিমতো হুমকির সুরে নিদান দেন, ‘ট্রেন ধরব, জোরে চালান!’ কিন্তু এক্ষেত্রে কোনও দুর্ঘটনা হলে তার দায় কে নেবে? প্রশ্ন টিটুবাবুর।
তিনি বলেন, ‘‘নতুন আচরণবিধির কথা জানার পর থেকেই বেসরকারি পরিবহণের শ্রমিক মহলে এক আশঙ্কার আবহ তৈরি হয়েছে। শুধু শ্রমিকেদেরই নয়, আমাদেরও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। কারণ, সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি সরকারকে আমরা কর দিই। এর পর সরকারপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাস চালাতে গেলে মুচলেকা দিতে হবে। সেই মুচলেকায় বলতে হবে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে বাসমালিক, চালক এবং কন্ডাক্টারের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হবে। সরকারের পদক্ষেপে আমরা শঙ্কিত। আশঙ্কার কথা পরিবহণমন্ত্রীকেও জানিয়ে দিয়েছি।’’