দেশ বিভাগে ফিরে যান

কংগ্রেসের সঙ্গে মিশতে চলেছে শারদ পাওয়ারের এনসিপি! বাড়ছে জল্পনা

November 25, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে চলছিল একটি জল্পনা- শারদ পাওয়ারের এনসিপি মিশে যাবে কংগ্রেসের সঙ্গে। লোকসভা নির্বাচনের আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রবীণ এনসিপি নেতা সারদ পাওয়ার জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের পর ছোট ছোট আঞ্চলিক দলগুলির কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকবে। কোনও কোনও দল আবার কংগ্রেসের সঙ্গে মিশেও যাবে। তার পরই প্রশ্ন উঠেছিল, পওয়ার কি নিজের দলের কথা ইঙ্গিত করছিলেন? সে প্রশ্নের জবাবে মারাঠা স্ট্রংম্যান জল্পনা আরও বাড়িয়ে বলে দেন, “আমরা কংগ্রেসের থেকে খুব একটা আলাদা নই। আমরাও গান্ধী-নেহেরুর আদর্শে বিশ্বাস করি।”

পওয়ারের এই মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল, তাহলে কি প্রবীণ মরাঠা নেতা এ বার তাঁর দলকে কংগ্রেসে মিশিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন? মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে ফের সেই জল্পনা নতুন করে শুরু হয়েছে।

বিদেশিনী সোনিয়া কেন দেবেন দলের নেতৃত্ব? এই প্রশ্ন তুলে ঠিক ২৫ বছর আগে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন শারদ পাওয়ার। সঙ্গে ছিলেন পূর্ণ আজিটক সাংমা আর তারিক আনোয়ার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি বিরোধী শক্তি মজবুত করতে সেই পাওয়ারই এখন কংগ্রেসের অন্যতম বিশ্বস্ত সঙ্গী। তারিক আনোয়ার ফিরে এসেছেন কংগ্রেসে। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও সুসম্পর্ক শারদ পাওয়ারের। কন্যা সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে রাহুল-প্রিয়াঙ্কার। পাওয়ারের হাতে তৈরি দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) ভেঙে চুরমার। ভাইপো অজিত পাওয়ারের কাছে পরাজিত। তাই মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে ধরাশায়ী হওয়ার পর ‘মারাঠা স্ট্রংম্যান’ শারদ পাওয়ারের এনসিপি কি মিশে যেতে পারে কংগ্রেসে? রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।

বছর দুই আগে (২০২২ সালে) কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচনের সময় শারদ পাওয়ারকে ‘অফার’ দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেসের শীর্ষ মহল থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, আপনার দলকে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। এবং কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে লড়ুন। সমর্থন দেবে গান্ধী পরিবার। কিন্তু তা মানেননি শারদ পাওয়ার। তবে ১৯৯৯ সালের তাঁর হাতে গড়া দল ক্রমশই দুর্বল হচ্ছে। দলের প্রতিষ্ঠতা হয়েও মালিকানা হারিয়েছেন। এবার বিধানসভা ভোটে ভাইপোর এনসিপির প্রার্থীর কাছে কাকার এনসিপি হেরেছে ২৯ আসনে।

বারামতী আসনটি ‘পাওয়ার পরিবারের’ বলেই মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে পরিচিত। লোকসভায় ওই আসনে সুপ্রিয়া সুলে অজিত পাওয়ারের স্ত্রী সুনেত্রাকে হারিয়েছিলেন। বিধানসভায় তার প্রতিশোধ নিয়েছেন অজিত পাওয়ার। শারদ পাওয়ারের এনসিপির প্রার্থী তথা ভাইপো যুগেন্দ্রকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন। দুই এনসিপির লড়াইয়ে মহারাষ্ট্র দেখল চমক! শারদ পাওয়ারের এনসিপি মানুষের সমর্থন বেশি পেয়েছে। পাওয়ারের দল পেয়েছে মোট ভোটদানের ১১.২৮ শতাংশ। আসন মাত্র ১০। আর অজিতের এনসিপির ভোট প্রাপ্তির হার ৯.০১ শতাংশ। কিন্তু আসন ৪১।

পাওয়ার পরিবারের ডায়রেক্ট লড়াইয়ের পাশাপাশি এনসিপি বনাম এনসিপির লড়াইয়ে আহেরি কেন্দ্রে মুখোমুখি হয়েছিলেন বাবা-মেয়ে। জিতেছেন অজিতের এনসিপির প্রার্থী বাবা ধর্মারাও আতরাম। হেরেছেন মেয়ে ভাগ্যশ্রী। ইভলা কেন্দ্রে অজিতের প্রার্থী ছগন ভুজবল হারিয়েছেন পাওয়ারের মানিকরাও সিন্ধেকে। একইভাবে অনুশক্তিনগরে এনসপির প্রার্থী তথা প্রাক্তন মন্ত্রী নবাব মালিকের কন্যা সানা হারিয়েছেন পাওয়ারের এনসিপির প্রার্থী তথা অভিনেত্রী স্বরা ভাস্করের স্বামী ফাওয়াদ আহমেদকে। ভোটের আগে ফাওয়াদ সমাজবাদী পার্টি ছেড়ে পাওয়ারের প্রার্থী হয়ে লড়েছিলেন। এভাবে একের পর এক আসনে দুই এনসিপির মুখোমুখি লড়াইয়ে অজিত হয়ে উঠলেন ‘পাওয়ারফুল।’ আর পাওয়ার কমল শারদ পাওয়ারের। এনডিএ বিরোধী এমভিএ জোটের এমনই হাল হল যে এবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় কেউ বিরোধী দলনেতার পদই পাবেন না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Congress, #Rahul Gandhi, #sharad pawar, #NCP

আরো দেখুন