রপ্তানি বন্ধ পশুখাদ্যের কাঁচামাল ডিওবির, সংকটের মুখে ভোজ্য তেল উৎপাদন শিল্প?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পশুখাদ্যের কাঁচা মাল ডিওবির রপ্তানি ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের ভোজ্য তেল উৎপাদন শিল্প চরম সংকটের মুখে। কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর কাছে ফের আর্জি জানালেন ভোজ্য তেল উৎপাদনকারীদের অ্যাসোসিয়েশন। এর জেরে পূর্ব বর্ধমানে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। ধানের তুষ থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদনেও শীর্ষে বাংলার এই জেলা। গোটা বাংলায় যে সংখ্যক
সলভেন্ট প্লান্ট রয়েছে তার তিন ভাগের দু’ভাগ রয়েছে বর্ধমানে। প্রতি বছরই কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যাবসা হয়। যা থেকে সরকারের আয়ও কম নয়। সলভেন্ট প্লান্টে পড়ে থাকা ডিওবি রপ্তানি যাতে সহজ হয় তার জন্য কেন্দ্রের কাছে লাগাতার আর্জি জানানো হচ্ছে।
রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয় পূর্ব বর্ধমানে। চাল উৎপাদনেও সবচেয়ে এগিয়ে এই জেলা। ধান থেকে চাল তৈরির পর মিলে পড়ে থাকে তুষ বা কুঁড়ো। ওই কুঁড়ো থেকেই কয়েক লক্ষ টন ভোজ্য তেল উৎপাদন হয়। যে শিল্পের পোশাকি নাম সলভেন্ট প্লান্ট। প্রায় ৫০০ টির মতো রাইস মিল রয়েছে বর্ধমানে। সেখানে চাল ভাঙানোর পর পড়ে থাকা তুষ চলে যায় সলভেন্ট প্লান্টে। তৈরি হয় রাইস ব্রান বা ভোজ্য তেল। সারা রাজ্যে ৩৩ টি সলভেন্ট প্লান্ট আছে। তার মধ্যে ২২ টাই রয়েছে পূর্ব বর্ধমানে।
ধান থেকে চাল তৈরিতে রাইস মিলে পালিশ হয়, সেখান থেকে পাওয়া যায় একটা পাতলা আবরণ। সেই আবরণ থেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে তেল বের করা হয়। এক কুইন্টাল ধান থেকে দশ কেজি ব্রান এবং তা থেকে তেল পাওয়া যায়। রিফাইন করে ভোজ্য তেল উৎপাদন করে বাজারে পাঠানো হয়। এই তেল কেবল রাজ্য, দেশ নয় বিশ্বের বাজারেও বিক্রি হয়। এক কুইন্টাল তুষ থেকে প্রায় কুড়ি কেজি তেল পাওয়ার পরও বয়লারের ভুসি থেকে পশুখাদ্য তৈরি হয়। সেই পশুখাদ্য তৈরির কাঁচামাল ডিওবি নিয়েই বিপত্তি। সলভেন্ট প্লান্টের ভূসি অর্থাৎ ডিওবি থেকে পশুখাদ্য উৎপাদন হয়। দীর্ঘ দিন তার রপ্তানি বন্ধ।
অভিযোগ, কোনও রকম কারণ ছাড়াই দীর্ঘ দিন ধরে রপ্তানি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। এমন অবস্থা হয়েছে যে, ডিওবি রাখার জন্য সলভেন্ট প্লান্টগুলোতে আর জায়গা নেই। বেশিরভাগ রাইস ব্রান ওয়েল কারখানা বন্ধের মুখে। পশু খাদ্যের ঘাটতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। লোকসান বাড়ছে কুঁড়ো থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদন কারাখানাগুলোতে। অবিলম্বে রপ্তানি চালুর দাবি জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া। আবারও কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে অ্যাসোসিয়েশনের তরফে। এভাবে চলতে থাকলে এই শিল্পে ঘোর সংকট নেমে আসতে চলেছে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।