মোদী জমানার ৫ বছরে ১০ লক্ষ কোটি কর্পোরেট ঋণ মকুব কিন্তু কৃষক-মধ্যবিত্ত বঞ্চিতই

কৃষি এবং সমবায় ঋণ কিছু আছে বটে, তবে ১০ লক্ষ কোটি টাকার পাহাড়ে তা কয়েকটা নুড়ির সমান।

November 28, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
— গ্রাফিক: মানস মোদক

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মোদী জমানার প্রথম পাঁচ বছরে প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ মকুব নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। তার পরের পাঁচ বছর, অর্থাৎ ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অঙ্কেও কিন্তু খুব ফারাক হল না। সরকারি তথ্যই বলছে, এই সময়সীমায় প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ মকুব হয়েছে। এবং তার সিংহভাগই কর্পোরেট।

কৃষি এবং সমবায় ঋণ কিছু আছে বটে, তবে ১০ লক্ষ কোটি টাকার পাহাড়ে তা কয়েকটা নুড়ির সমান। আর তার সবটাই প্রায় ভোটের লক্ষ্যে। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে। কেমন আছে ‘নতুন ভারত’? দেশে-বিদেশে এই প্রশ্ন বারবার ওঠে। আর এর জবাব হিসেবে প্রতিবারই কোনও না কোনও প্রোপাগান্ডা সামনে আসে। সরকার বলে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু তারপরও মধ্যবিত্ত ঝুঁকে পড়ে ঋণের বোঝায়। কারণ, বাজারের সঙ্গে তাদের আয় পাল্লা দিতে পারে না। ঋণে ডুবে যায় কৃষক। বাড়তে থাকে সুদের পরিমাণ। আন্দোলন হয়। দাবি ওঠে, কৃষিঋণ মকুব করতে হবে। কিন্তু সেই আর্তি দিল্লির দরবারের অন্দরমহলে পৌঁছয় না। সেখানে অবাধ যাতায়াত শুধু কর্পোরেটের!

২০২৩-২৪ অর্থবর্ষেই ২০ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার কৃষিঋণ দিয়েছে সরকার। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, ভারতে কৃষিঋণ শোধের হার যথেষ্ট ভালো। তারপরও কৃষকদের কোনও বাড়তি সুবিধা কর্পোরেটদের মতো দেওয়া হয় না। অথচ, ১৯৯০-৯১ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবর্ষে কিন্তু কৃষিঋণ মকুব হয়েছে। আর ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে? মকুব হয়েছে ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ। তার বেশিটাই কর্পোরেট। কৃষকদের মতো বেহাল দশা ছোট ব্যবসায়ীদেরও। গত ছ’বছরে প্রায় ৪১ হাজার সংস্থা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদন করেছে। গত ছ’মাসে সংখ্যাটা ২ হাজার ২৩৬। সংসদে একথা জানিয়েছেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁর বক্তব্য, ২০১৮-১৯ থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণের ভারে মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার সংস্থা। এই ক’বছরে ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপসি কোডের (আইবিসি) আওতায় ৪০ হাজার ৯৪৩টি আবেদন জমা পড়েছে জাতীয় কোম্পানি ল’ ট্রাইব্যুনালে (এনসিএলটি)। ১ হাজার ৬৮টি আবেদনের নিষ্পত্তি হয়েছে ট্রাইব্যুনালে। উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকার বেশি। এর বেশি তথ্য তাঁর কাছে নেই। বিরোধীদের প্রশ্ন, তাহলে লাভের গুড় কে খাচ্ছে?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন