ইতিমধ্যেই বাজারে আসতে শুরু করেছে খেজুর গুড়, খাদ্যরসিক বাঙালির প্রাণে খুশির হাওয়া
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঠান্ডা পড়তেই শিউলি পাড়ায় ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। বিকেলে খেজুর গাছে রসের হাড়ি লাগিয়ে ভোরে গাছ থেকে রসের হাঁড়ি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন শিউলিরা। তারপরে শুরু হয় ধীরে ধীরে রস ফুটিয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। লোহার বড় কড়াইয়ে একাধিক হাঁড়ির রস ঢেলে প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা ফোটানোর পরে রসের ঘনত্ব বাড়ে এবং রং লালচে হতে শুরু করে।
দক্ষ কারিগর কাঠি দিয়ে ফুটন্ত গুড় তুলে পরখ করেন। ঘনত্ব, স্বাদ ও গন্ধ ঠিকঠাক হলেই নামিয়ে নেওয়া হয়। মুর্শিদাবাদ থানার কাটরার বাসিন্দা সঞ্জয় মণ্ডল আজাদ হিন্দ বাগ এলাকায় ৪০ হাজার টাকায় ২৫০টি খেজুর গাছ লিজ নিয়েছেন। সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, এক কেজি ভালো মানের গুড় তৈরি করতে কমপক্ষে ১০-১২ কেজি রস লাগে। এই বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ভালো রস পাওয়া যাচ্ছে।
অগ্রহায়ণ মাস জুড়ে বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব চলবে। ফলে খেজুরের গুড়ের ভালো চাহিদা থাকে। যেহেতু বেশিরভাগ মানুষ স্বাদের সঙ্গে কোনও আপস করেন না। তাই শীতের মরশুমে খাঁটি গুড়ের চাহিদা থাকে। গুড় বিক্রি করে ভালো লক্ষ্মীলাভ হয়। তবে ইদানীং অনেকে কম দামে গুড় চাইছেন। খদ্দের ধরতে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল গুড় বাজারে এনে কম দামে বিক্রি করছেন।
ফলে আমাদের একটু সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। নশিপুরের বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল বলেন, এক কেজি খাঁটি খেজুর গুড় ১৮০ টাকায় বিক্রি না করতে পারলে লাভ হয় না। অনেকে ১০০-১২০ টাকার উপরে এক কেজি গুড় কিনতে চান না। তখন খরিদ্দার ধরতে ভেজাল মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। তবে ভালো গুড়ের খদ্দেরও আছে। এদিকে শুধু নবান্ন উৎসব নয়, সারা শীতের মরশুম ধরে বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠে পায়েস রান্না হবে। পিঠে ও পায়েসের স্বাদে অন্য মাত্রা জুড়ে দেয় ভালো মানের খেজুর গুড়। এছাড়া শীতে মিষ্টির দোকানে খেজুর গুড়ের রসগোল্লা, সন্দেশ সহ রকমারি মিষ্টি বাঙালির রসনাকে তৃপ্ত করে।