কৃষি অধ্যাদেশ নিয়ে তুলকালাম কুরুক্ষেত্রে
কেন্দ্রের আনা কৃষি সংক্রান্ত তিনটি অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র। ওই তিনটি কেন্দ্রীয় অধ্যাদেশ ‘কৃষক বিরোধী’, এই অভিযোগ তুলে এ দিন কুরুক্ষেত্রের পিপলিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন এবং অন্যান্য কৃষক সংগঠন।
এই বিক্ষোভ-প্রতিরোধকে কেন্দ্র করে এ দিন সংঘর্ষ বেধে যায় কৃষক এবং হরিয়ানার বিজেপি সরকারের পুলিশের মধ্যে। মিছিলে বাধা পেয়ে ক্ষুব্ধ কৃষকেরা পুলিশকে নিশানা করে পাথর ছোড়েন। পুলিশ পাল্টা লাঠি চালালে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী আহত হন। কৃষক সংগঠন এবং একাধিক বিরোধী দলের নেতাকে প্রথমে গ্রেফতার করলেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এ দিন বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের ডাকা ‘কিসান বাঁচাও, মান্ডি বাঁচাও’ মিছিলটির পিপলি মান্ডি পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ভারতীয় কিসান ইউনিয়নকে এই মিছিল করতে নিষেধ করে হরিয়ানার মনোহর লাল খট্টরের সরকার। ৫০ কিমি দূরে অম্বালায় ভারতীয় বায়ুসেনায় রাফালের অন্তর্ভুক্তি অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপস্থিতির কারণে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। মিছিল নিয়ে সতর্ক করে বার্তা দেয় পুলিশও।
পাল্টা কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে তাদের পাশে দাঁড়ায় কংগ্রেস এবং আপ। এ দিন কৃষকদের মিছিল আটকাতে জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড করে পুলিশ। বেশ কয়েকটি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায় কৃষকদের মিছিল। জাতীয় সড়কও অবরোধ করেন কৃষকেরা। তার পরেই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তুমুল সংঘর্ষ বাধে। প্রায় চার ঘণ্টার অবরোধে ব্যাহত হয় যান চলাচল। অবশেষে ব্যারিকেড তুলে কৃষকদের মিছিলকে পিপলি মান্ডি পর্যন্ত যেতে দেয় জেলা প্রশাসন।
এ দিন পুলিশ ও রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে ঘটনাটিকে ‘দমনকারী সরকারের’ বিরুদ্ধে তাঁদের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেছেন হরিয়ানার ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন-এর সভাপতি গুরনাম সিংহ চারুনি। তাঁর হুঁশিয়ারি, কৃষক বিরোধী ওই অধ্যাদেশগুলি প্রত্যাহার না-হলে দেশ জুড়ে আরও বড় বিক্ষোভ-আন্দোলনে নামবেন কৃষকেরা।
কৃষকদের দুর্দশার জন্য হরিয়ানার বিজেপি সরকারকেও এ দিন কাঠগড়ায় তুলেছেন কৃষকেরা। কৃষক নেতা অক্ষয় হাথিরার অভিযোগ, মিছিল না-করার কথা বলে কৃষকদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করেছিল রাজ্য সরকার। তাই ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।