নেতাই গ্ৰামে শহিদ দিবস পালন তৃণমূলের, উঠল গণহত্যায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মঙ্গলবার নেতাই গ্ৰামে শ্রদ্ধার সঙ্গে শহিদ দিবস পালন করল তৃণমূল। শহিদ স্মরণের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব বলেন, ইতিহাসকে সামনে রাখতে হয়। ইতিহাসকে ভুলে গেলে চলে না।
ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শহিদ বেদিতে তৃণমূল নেতারা একে একে মাল্যদান করেন। শহিদ পরিবারের সদস্যদেরও আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। মঞ্চে বক্তাদের ভাষণে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বার বার উঠে আসে। গণহত্যার পর ১৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরে এসে আবার সক্রিয় রাজনীতি করছেন। ফলে নেতাই গ্ৰামবাসীদের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের গলাতেও ক্ষোভ ফুটে উঠেছে। তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার মঞ্চ থেকে সিবিআইয়ের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন। দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ডাক দেন।
নেতাই গণহত্যার মামলার তদন্ত প্রথমে সিআইডি শুরু করে। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার যায়। সিপিএমের তৎকালীন বিনপুর জোনাল সম্পাদক অনুজ পান্ডে সহ ২০ জন সিপিএম নেতাকর্মীকে গ্ৰেপ্তার করা হয়। গণহত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুজ পান্ডে তপন দে, ডালিম পান্ডেরা জামিন পেয়ে যান। রাজনৈতিক মামলার ঘটনায় সিবিআইয়ের যে অতি তৎপরতা চোখে পড়ে, নেতাই মামলার ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না কেন, প্রশ্ন উঠছে।
শহিদ তর্পণের অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতা জয় প্রকাশ মজুমদার বলেন, নেতাই গণহত্যার পরদিন সিপিএমের পুলিস বাহিনী রাস্তা আটকে দিয়েছিল। হার্মাদ বাহিনীরা লালগড় এলাকা ঘিরে রেখেছিল। অকুতোভয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার পরের দিন শহিদ পরিবারের সদস্যদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি কোনওদিন নেতাইকে ভুলে যাননি।
উল্লেখ্য, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে চার্জশিট পেশ হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত একজনেরও সাজা হয়নি। তৃণমূলের অভিযোগ, সিবিআইকে তার কৈফিয়ত দিতে হবে। যাদের হাত রক্তে লাল তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালে নির্দেশ দিয়েছিল দুই বছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। কোন অজ্ঞাত কারণে সিবিআই নিষ্ক্রিয় তা জানতে চেয়েছে সিবিআই। সেই সঙ্গে জয়প্রকাশ বলেন, দোষীদের শাস্তি না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গলায় শোনা যায় একই সুর। তিনি বলেন, ভুলে গেলে চলবে না, এলাকার মানুষের রক্তাক্ত হওয়ার কথা। সেদিনের কথা স্মরণ রেখে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।