‘মেরুকরণ’কে হাতিয়ার করেই ২৬’এর বিধানসভা ভোটে যেতে মরিয়া বিজেপি

বিজেপির বৈঠকে একগুচ্ছ নির্দেশ, সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল রাজ্য নেতৃত্বকে।

January 22, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
——— গ্রাফিক: মানস মোদক

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: বিজেপির বৈঠকে একগুচ্ছ নির্দেশ, সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল রাজ্য নেতৃত্বকে। মঙ্গলবার বিধাননগরের এক হোটেলে দলের বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল, অমিত মালব্যরা।

একদিকে যেমন রাজ্য নেতৃত্বের আচরণ সংযত করার নির্দেশ দেওয়া হল, অন্যদিকে তেমনি এই রাজ্য থেকে বার বার আসা অভিযোগ নিয়ে যে কেন্দ্র খুশি নয়, সেই ব্যাপারেও সতর্ক করা হল।

এদিনের বৈঠকের নির্যাস, প্রায় ৪০ হাজার বুথের মধ্যে ৩০ শতাংশ বুথ বাদ রেখে বিজেপি ২৬ বুথে নির্বাচন লড়তে চলেছে। সংখ্যালঘু এলাকায় কোন বুথে সংগঠনের দরকার নেই বলে বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, শুভেন্দু কেন দলীয় সাংগঠনিক বৈঠকে থাকে না। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় নেতা ও পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে এদিনের সাংগঠনিক বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন দুই সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহা, সাংসদ জয়ন্ত রায়, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার এবং অমিতাভ চক্রবর্তীর মতো নেতারা উপস্থিত থাকলেও, ছিলেন না বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বললেন, উনি এই ধরনের বৈঠকে কমফোর্ট ফিল করেন না। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল সতর্ক করে বলেন, বুথ স্তরে কমিটি গঠনে কোনও জল মেশাবেন না। এই রাজ্য নিয়ে এমন অভিযোগ বার বার আছে। সাংগঠনিক বৈঠকে ঠিক হয়েছে, মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন আগামী ৫ তারিখ এবং ১০ তারিখের মধ্যে জেলা সভাপতি নির্বাচন।

এর পাশাপাশি সুনীল বনসল, অমিত মালব্যদের স্পষ্ট নির্দেশ—বাংলায় ক্ষমতা দখলে কোনও প্রয়োজন নেই সংখ্যালঘু ভোটের। সংখ্যালঘু এলাকায় দরকার নেই বুথ কমিটির। এহেন এলাকাগুলি বাদ দিয়েই গোটা রাজ্যে ওই স্তরের সংগঠন তৈরি করতে হবে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এহেন ‘ফতোয়া’য় স্পষ্ট—সংখ্যাগুরু ভোটারদের সমর্থনকে ভিত্তি করেই ২৬’এ বাংলার গদি দখলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে পদ্মপার্টি। বিজেপি সূত্রের খবর, মেরুকরণের এই রাজনীতিকে পুঁজি বানানোর লক্ষ্যেই রাজ্যের প্রায় ৮০ হাজার বুথের মধ্যে ৩০ শতাংশকে এড়িয়ে ভোটযুদ্ধে নামার প্রস্তুতি শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।

সম্প্রতি সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমে বাংলার বিজেপির সাংগঠনিক কঙ্কালসার দশাটা সামনে এসেছে। বারবার নির্দিষ্ট সময়সীমা বাড়িয়ে, বেশ কিছুটা ‘জল’ মিশিয়েও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি গেরুয়া শিবির। সেই পর্বেই প্রায় ২৫ হাজার বুথ ‘এড়িয়ে’ কীভাবে ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ স্লোগান সফল হবে, আর কীভাবেই বা বাংলা দখলের এই স্বপ্ন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। তবে দলের কট্টরপন্থী যে অংশ সরাসরি মেরুকরণের রাজনীতিতে বিশ্বাসী, আর তার স্লোগান ‘যো হামারে সাথ, হাম উনকে সাথ’কে ব্রত করে এগতে চাইছে, তারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এহেন সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen