ভোট দেখে নয়, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে পেশ হল রাজ্য বাজেট, একনজরে দেখে নিন বাজেটে কী কী ঘোষণা করা হল

২০২৩ সাল এবং ২০২৪ সালের বাজেটের পর ২০২৫ সালের বাজেট। পর পর তিন বছর রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিয়ারনেস অ্যালোওয়েন্স বা ডিএ) বাড়ানো হল। রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বুধবার বাজেট বক্তৃতায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য চার শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ঘোষণা করলেন। এর ফলে তা বেড়ে দাঁড়াল ১৮ শতাংশ। চন্দ্রিমা জানিয়েছেন, ১ এপ্রিল থেকে বর্ধিত হারে ডিএ কার্যকর হবে।

February 12, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০২৩ সাল এবং ২০২৪ সালের বাজেটের পর ২০২৫ সালের বাজেট। পর পর তিন বছর রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিয়ারনেস অ্যালোওয়েন্স বা ডিএ) বাড়ানো হল। রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বুধবার বাজেট বক্তৃতায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য চার শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ঘোষণা করলেন। এর ফলে তা বেড়ে দাঁড়াল ১৮ শতাংশ। চন্দ্রিমা জানিয়েছেন, ১ এপ্রিল থেকে বর্ধিত হারে ডিএ কার্যকর হবে।

আগামী বছর ভোটের দিকে তাকিয়ে পুরোপুরি খয়রাতি বাজেটের পথে হাঁটল না রাজ্য সরকার। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো ‘সফল’ মডেলে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হল না। একাধিক যে জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর আশা করা হয়েছিল, চোখ-কান বুজে সেই পথে হাঁটেননি অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশের পর সাংবাদিক বৈঠক থেকে কেন্দ্রের বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, “দুটো বাজেটকে পাশাপাশি রেখে দেখুন। ওরা অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়, ভোট মিটলে সেগুলো করে না। আমরা ভোট দেখে বাজেট করি না। আমরা নিজেদের সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও মানুষের জন্য সার্বিক উন্নয়নের কাজ করি।”

এবারের বাজেটের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, এবারের বাজেটে আরও কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্য ছিল। নিউ টাউনের সিলিকন ভ্যালিতে ৭৫,০০০ কর্মসংস্থান হবে। লেদার কমপ্লেক্সে লাখ-লাখ কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ৯,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামিদিনে ১৬ লাখ পরিবার সেই সুবিধা পাবেন। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের যে প্রথম পর্যায় চলেছে, তাতে ৭,২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়।

বাজেটে অর্থমন্ত্রী জানান, দু’বছরের মধ্যে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ সম্পূর্ণ হবে। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। এরই পাশাপাশি নদী ভাঙন রোধে এবারের বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। একই সঙ্গে নদী বন্ধন নামে নতুন প্রকল্পেরও ঘোষণা করেছে রাজ্য। এই প্রকল্পেও ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

গঙ্গাসাগর যাওয়ার জন্য এই সেতুর কাজ শেষ করতে চার বছর সময় লাগবে এবং সরকারিভাবে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার আরও ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সেতু নির্মাণের কাজে যে গতি বাড়বে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

গত জানুয়ারি মাসেই আশা কর্মীদের ‘উপহার’ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৭০ হাজার আশাকর্মীকে স্মার্টফোন দেওয়া হবে বলে জানালেন বাজেটে। এই জন্য বরাদ্দ করা হল ২০০ কোটি টাকা।

কৃষিজ বিপণন বিভাগের জন্য ৮২৬ কোটি টাকা ব্যয়বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়ছে। অন্যদিকে, কৃষিবিভাগের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, শস্যবিমা যোজনায় ১ কোটি ১২ লক্ষ কৃষকের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ১ কোটি ৮ লক্ষ কৃষককে দুই কিস্তিতে মোট ২৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

এদিন বাজেটে পথশ্রী প্রকল্পে গ্রামীণ পথঘাটের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১,৫০০ কোটি টাকা। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে ৮৬৬.২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নে ৭৫৬.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে আপাত ভাবে হতাশ করলেও, মুখ্যমন্ত্রীর এই বাজেট কিন্তু ‘গ্রামমুখী’ উন্নয়নের দিকেই ইঙ্গিত করছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen