রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

৭ হাজার কিমি রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু বাংলায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে

September 15, 2020 | 2 min read

ছবি: ফাইলচিত্র

 কর্মসংস্কৃতির এ এক অনন্য নজির! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর পেরিয়েছে পক্ষকাল। এর মধ্যেই গ্রামবাংলার রাস্তা মেরামতে সমীক্ষার কাজ শেষ করে ফেলল পঞ্চায়েত দপ্তর। তাতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় সাত হাজার কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করা এখনই জরুরি। কাজ শেষ করার প্রাথমিক টার্গেট পুজো। নিতান্ত সম্ভব না হলে একুশের জানুয়ারি। তার পর কিন্তু আর গ্রামীণ এলাকায় ভাঙাচোরা রাস্তা দেখতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। এমন কড়া অবস্থান পঞ্চায়েত ও পূর্তদপ্তরের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে নতুন রাস্তা নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কিছুটা রদবদল করতে চলেছে নবান্ন। জানা গিয়েছে, এবার থেকে নতুন রাস্তা যে ঠিকাদারি সংস্থা তৈরি করবে, তারাই পাঁচ বছর দেখভালের দায়িত্বে থাকবে। প্রয়োজনে মেরামতও করবে ওই সংস্থা। এমন শর্তের কথা উল্লেখ করতে হবে টেন্ডার নোটিসে।
আগস্ট মাসের শেষে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া সহ একাধিক জেলার বেহাল রাস্তাঘাট নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পঞ্চায়েত ও পূর্তদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাস্তাগুলি দ্রুত মেরামত করার। সেই মতো চলতি মাসের শুরুতেই ভাঙা রাস্তা নিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু করে পঞ্চায়েত দপ্তর। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেই সমীক্ষার কাজও সম্পূর্ণ। এই সাত হাজার কিলোমিটার ভাঙাচোরা রাস্তার মধ্যে রয়েছে গ্রাম বাংলা সড়ক যোজনা প্রকল্পে তৈরি হওয়া রাস্তাও। আবার গ্রাম বা পাড়ার সংযোগকারী সিমেন্ট কিংবা পিচের রাস্তার বেহাল দশা উঠে এসেছে ওই সমীক্ষায়। জেলা পরিষদের অধীনে থাকা কিছু রাস্তার মেরামত প্রয়োজন বলেও সমীক্ষার রিপোর্টে জানিয়েছেন ইঞ্জিনিয়াররা। নবান্ন সূত্রে খবর, সমীক্ষা অনুযায়ী দ্রুত রাস্তা সারাইয়ের কাজে ঝাঁপাবে পঞ্চায়েত দপ্তর। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।
গ্রামবাংলার বেশির ভাগ রাস্তাই গ্রাম পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের অধীন। এছাড়াও পূর্ত দপ্তরের এক্তিয়ারে রয়েছে প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার রাস্তা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসর পর গ্রামবাংলা সড়ক যোজনা প্রকল্পেও প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কিমি নতুন রাস্তা তৈরি হয়েছে রাজ্যে। অল্পবিস্তর প্রায় প্রতিটি রাস্তারই কঙ্কালসার চেহারা এ বছর বেশি ফুটে উঠেছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মূলত তিনটি বিষয়
উল্লেখ করেছেন ইঞ্জিনিয়াররা। এক, প্রতি বছর বর্ষার আগে রাজ্যজুড়ে রাস্তার ‘প্যাচওয়ার্ক’ হয়। অর্থাৎ খানাখন্দ সারানো কিংবা পিচ ফেলা। কিন্তু এবার লকডাউনের কারণে সেই কাজ করা সম্ভব হয়নি। দুই, জেলা পরিষদ ও গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিস বন্ধ থাকায় নজরদারিতে ঘাটতি থেকে গিয়েছে। তিন, উম-পুনের তাণ্ডব। তুমুল ঝড়-বৃষ্টিতে মোট সাতটি জেলার রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে। গ্রাম-শহর মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার। সারাই করতে খরচ পড়বে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি। সবচেয়ে খারাপ হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনা জেলার রাস্তাঘাট। ইতিমধ্যেই এই তিন জেলার ভাঙাচোরা রাস্তাগুলির কাজ শুরু করেছে পঞ্চায়েত ও পূর্তদপ্তর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#WestBengal, #Road Repair, #Roads

আরো দেখুন