১৩৬ বছরে পড়ল কোন্নগরের শকুন্তলা কালীর পুজো
ভাগাড়ের মধ্যে শকুনের বাসার নিচে দেবী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। সেই থেকেই দেবীর নাম হয় শকুন্তলা কালী।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হুগলি জেলা তথা কোন্নগরের অন্যতম প্রাচীন কালী পুজো হল শ্রী শ্রী শকুন্তলা কালী পুজো। ১৩৬ বছরের পুজোকে ঘিরে বহু মানুষের সমাগম হয়। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শনিবার পুজোর আয়োজন করা হয়। এবার ২৬ এপ্রিল বাংলার ১২ বৈশাখ হয়ে গেল মা শকুন্তলার পুজো। গোটা কোন্নগরজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। মন্দিরের বাইরে উৎসবের মেজাজ। বহু ভক্তদের ভিড় করে পুজো দিলেন।
দীর্ঘ চার প্রজন্ম ধরে শকুন্তলা কালী মায়ের মূর্তি তৈরি করে আসছেন কোন্নগর বারো মন্দির সংলগ্ন এলাকার মৃৎশিল্পী বাদলচন্দ্র পাল। আগে এক রাতেই তৈরি হত মায়ের মূর্তি। এক রাতে পুজো হত, পরের দিন সকালে হত নিরঞ্জন। এখনও পুজোর পর দিন সূর্য ওঠার আগে দেবীর বিসর্জন দেওয়া হয়। পুজো উপলক্ষ্যে ভক্তদের সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। রাতভর ভক্তরা গঙ্গাস্নান করে দণ্ডী কাটলেন। জল ঢালার পালা চলল।

জনশ্রুতি রয়েছে, পুরোহিত ইন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তিনি দেবীর স্বপ্ন দেশ পান। পূজারী ইন্দ্রনাথ পুজো করে বাড়ি ফিরবার সময় দেখতে পান সাদা কাপড় পড়ে খোলা চুলে কোন এক রমণী রাতের অন্ধকারে হেঁটে আসছিলেন। তাকে অনুসরণ করে পূজারী আসতেই দেখতে পান সুন্দরী রমণী এক ভাগাড়ের মধ্যে থাকা অশ্বত্থ গাছের নিচে এসে বিলীন হয়ে গেলেন। সেই রাতেই দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, ভাগাড়ের অশ্বত্থ গাছের নিচে যেখানে শকুনের বাসা রয়েছে তার তলায় দেবীর ঘট স্থাপন করে পুজো করার জন্য। তারপর শুরু হয় পুজো। ভাগাড়ের মধ্যে শকুনের বাসার নিচে দেবী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। সেই থেকেই দেবীর নাম হয় শকুন্তলা কালী। পুজোর দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে কাঁধে করে দেবীকে নিয়ে আসা হয় তার বেদীতে। সূর্য ওঠার আগেই শকুন্তলা রক্ষা কালী মায়ের বিসর্জন হয়। পুজো ঘিরে মেলা বসে। সাত দিনব্যাপী মেলা চলে।