কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক মমতার
কৃষি বিলের বিরোধিতায় গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, কৃষি বিল পাশ করার দিন ‘কালা রবিবার’ হয়ে থাকবে দেশের ইতিহাসে। সংসদে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। কোনও নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে বিল পাশ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। রাজ্য তথা দেশবাসীকে এই বিলের বিরোধিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে আন্দোলন, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার রাজ্যসভায় পাশ হয়েছে কৃষি সংক্রান্ত দু’টি বিল। এই বিল পাশ ঘিরে রাজ্যসভায় তুলকালাম হয়েছে। তার জেরে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন-সহ আট সাংসদকে সাসপেন্ড করেছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সোমবার এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংসদের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সাসপেন্ড ৮ সাংসদ-সহ বিরোধীরা। সোমবার সারা দিন-রাত চলবে। মঙ্গলবার সকালে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবেন তাঁরা।’’
দিল্লির পাশাপাশি রাজ্যেও কৃষি বিলের বিরোধিতায় আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। তিনি বলেন,
• পেঁয়াজ আলুর দাম বাড়ছে কারণ লোকডাউন ঘোষণার সাথে সাথেই সরকার এই বিলের অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। আগে কোন জিনিসের দাম বাড়লে আমরা রাজ্য সরকার তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম। অর্ডিন্যান্স জারি করে সরকার জোদ্দারদের চাষীদের লুটে নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
• যাদের এক হেক্টর -এর থেকেও কম জমি আছে সেই মানুষগুলোর কি হবে? জোর করে দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা। একেই তো মহামারী চলছে।
• কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত চলছে। আমার রাজ্যে আলু নেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাইরে। আগে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতাম রাজ্যেই থাকবে ফসল। কৃষকরা দাম না পেলে ভর্তুকি দিতাম। প্রয়োজনে ট্রাক বা রেলের কামরা বুক করে বাইরে পাঠাতাম। রাজ্যের সব ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে।
• আলু, পেঁয়াজকে এসেনশিয়াল কোমোডিটিস থেকে কেন বাদ দেওয়া হল? কার স্বার্থে?
• এর ফলে কোন চাষী নূন্যতম মূল্য নিশ্চিত করতে পারবে না। কেউ আত্মহত্যা করবে, কেউ না খেতে পেয়ে মারা যাবে।
• কৃষক ইস্যুতে আজ বিরোধীরা এক জোট হয়েছে আগামীতে শ্রমিক ইস্যুতেও হবে। ওরা বলছে যেখানে ৩০০ জন কর্মী আছে সেখানে ইচ্ছে মতো ছাটাই করতে পার। আগে সেই সংখ্যাটা ছিল ৫০। এটা একটা বিশাল বজ্রাঘাত।
তিনি আরও বলেন,- ‘‘আগামিকাল, মঙ্গলবার গাঁধী মূর্তির পাদদেশে দলের মহিলা নেত্রী-কর্মীরা অবস্থান-বিক্ষোভ করবেন।’’ তবে করোনা সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। এর পর দলের অন্য শাখার নেতা-কর্মীরাও পর পর কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজ্য তথা দেশের সাধারণ মানুষ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেও আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।