আর্থিক তছরুপে জড়িত গুজরাতের শিল্পগোষ্ঠী, রিপোর্ট মার্কিন সংস্থার
মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের ‘ফিনান্সিয়াল ক্রাইমস এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক’ (ফিনসেন)-এর রিপোর্ট ঘিরে গোটা বিশ্বে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তার রেশ এসে পড়েছে ভারতেও। ফিনসেন-এর অতি গোপনীয় সন্দেহজনক আর্থিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত রিপোর্টে (এসএআর) আতস কাচের নীচে চলে এসেছে ভারতের এক বিখ্যাত শিল্পগোষ্ঠীর নাম।
মূলত অর্থ তছরুপ, সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত, ড্রাগ ডিল ও আর্থিক প্রতারণা সংক্রান্ত বিভিন্ন সন্দেহজনক কাজকর্ম নিয়ে ফিনসেন-এর এই অতি গোপনীয় রিপোর্টগুলি তৈরি হয়েছে। তেমনই একটি রিপোর্টে এক ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ সামনে এসেছে। গুজরাতের ওই শিল্পপতির সিঙ্গাপুরে একটি সংস্থা রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, করমুক্ত বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত সেশেলসের ‘ভুয়ো সংস্থা’র মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠেছে এই সংস্থাটির বিরুদ্ধে। দ্বীপরাষ্ট্র সেশেলসের ভুয়ো সংস্থাগুলির মাধ্যমে ২০০৫ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৬২৪ কোটি ডলারের অনিয়ম হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সন্দেহজনক গতিবিধি নিয়ে গোপন রিপোর্ট দিয়েছিল ব্যাঙ্ক অব নিউ ইয়র্ক মেলন’স (বিএনওয়াইএম)। তাদের আরও গোপনীয় রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই ১ হাজার ২৪২টি লেনদেন হয়েছিল। এগুলির মিলিত অর্থ ১০ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার। ভারতীয় গোষ্ঠীটির সিঙ্গাপুরের ওই সংস্থার সঙ্গে সেশেলসের মাহে ও ভিক্টোরিয়ার ঠিকানায় থাকা একটি সংস্থার লেনদেন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সেশেলসের এই সংস্থা থেকে ভারতীয় গোষ্ঠীর ওই সংস্থায় ঘুরপথে বহু ওয়্যার ট্রান্সফার হয়েছে। যার সামগ্রিক মূল্য প্রায় দেড় কোটি ডলার।
যদিও এবিষয়ে ভারতীয় গোষ্ঠীটির এক মুখপাত্র বলেন, সেশেলসের ওই সংস্থার সঙ্গে আমাদের লেনদেন পুরোপুরি বৈধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত তথ্য পেশও করা হয়েছে। তবে এই গোষ্ঠীর তরফে যাই বলা হোক না কেন, তাতে চিঁড়ে ভিজছে না। ২০১৩ সালের বিএনওয়াইএম-এর একটি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, সেই সময় সেশেলসের ওই সংস্থাটির ওয়েবসাইট ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ছিল। সাত বছর পরও তাই রয়েছে। পাশাপাশি ফিনসেন-এর রিপোর্টে নাম জড়িয়েছে কংগ্রেসের প্রাক্তন এক সাংসদেরও। শুধু তাই নয়, অন্ধ্রপ্রদেশে একটি খনি প্রকল্প ঘিরে ঘুষ হিসেবে বিশাল টাকার হাতবদল হয়েছিল বলেও রিপোর্ট। শুধু তাই নয়, ২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রায় দুই লক্ষ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের কথা বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। ব্যাঙ্কের তালিকায় রাষ্ট্রায়ত্ত স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে বেসরকারি আইসিআইসিআই-ও রয়েছে।