শশী থারুর – খেলা শেষ?
কংগ্রেসের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে শশীকে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে নেতা হিসেবে কেন্দ্র মনোনিত করায় কংগ্রেসে বেশ অসন্তোষ তৈরী হয়েছে এই সাংসদকে নিয়ে।
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:২৬: সম্প্রতি বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে খবরের শিরোনামে রয়েছেন কংগ্রেসের ‘তুখোড়’ নেতা শশী থারুর। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিরুবনন্তপুরমে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরকে হারিয়ে কেরলের সাংসদ হন তিনি। তবে দলের সঙ্গে মতবিরোধ তাঁর অনেক দিনের আর সেই কারণে দলে তিনি অনেকদিন ধরেই কংগ্রেসে কোণঠাসা। তবে এই বিষয়টি মাথাচাড়া দিয়েছে সম্প্রতি নীলাম্বুর কংগ্রেসের দখলে যাওয়ার পর।
গত সোমবার দেশের ৪টি রাজ্যের ৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। কেরলের ওয়েনাড লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নীলাম্বুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমকে হারিয়েছে কংগ্রেস। নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এলডিএফ জোটের প্রার্থী সিপিএম নেতা এম স্বরাজকে ১১,০৭৭ ভোটে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী আর্যদান শৌকথ। উল্লেখ্য, এই কেন্দ্রটি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সংসদীয় কেন্দ্রের আওতায় পড়ে। তাই এটা একপ্রকার সম্মানরক্ষার লড়াই ছিল গান্ধী পরিবারের কাছে। ২০২৬ সালে বাংলার সঙ্গেই কেরলেও বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে এই ফলাফল কংগ্রেসকে বেশ খানিকটা অক্সিজেন জোগালো একথা বলাই যায়। কিন্তু এই জয়ে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের (Shashi Tharoor) কোনরকম ভূমিকাই নেই। সূত্রের খবর, নীলাম্বুরে প্রচারের জন্য দল নাকি থারুরকে আমন্ত্রণই জানায়নি, এমনটাই অভিযোগ সাংসদের। তবে কংগ্রেসের কিছু নেতার কথায়, প্রচারের সময় মোদীর গুণগান করতেই নাকি ব্যস্ত ছিলেন সাংসদ।
বিগত কয়েক মাসে তাঁর বেশ কিছু মন্তব্য দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। পহেলগাঁও হামলা, অপরাশেন সিঁদুর নিয়ে তিনি বেশ কিছু মন্তব্য করেছিলেন, যার সাথে তার দলের অবস্থানের বা মতামতের একেবারেই মিল ছিল না। আশ্চর্যজনক বিষয়, নীলাম্বুরের ফলাফলের দিন সকালে, দক্ষিণ ভারতের একটি ইংরেজি সংবাদপত্রে তার লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে “বিশ্ব মঞ্চে ভারতের প্রধান সম্পদ” বলে অভিহিত করেছেন। নিবন্ধটি ছিল মোদী সরকারের অপারেশন সিন্দুর অভিযান নিয়ে, যেখানে থারুর সাতটি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদলের (যারা বিশ্বজুড়ে অপারেশন সিঁদুরের প্রচারে গিয়েছিলেন) মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
তবে সোমবার নীলাম্বুর জয়ের পর আর্যদান শৌকথ-কে নিজের এক্স প্ল্যাটফর্মে অভিনন্দন জানিয়েছেন থারুর, সঙ্গে কেরলে কংগ্রেস (Congress) কর্মীদেরও প্রশংসা করেছেন তিনি। তবে, থারুর যা লিখেছেন সেই বিষয়ে কংগ্রেসের কেউই কোন প্রতিক্রিয়া দিতে আগ্রহী নয়। উপনির্বাচনের প্রচারে না গিয়ে, তিরুবনন্তপুরমের সাংসদের অপারেশন সিন্দুরের প্রশংসা করে বিদেশে ঘুরে বেড়ানো যে দল সমর্থন করেনি তা কংগ্রেস মুখপাত্রদের থারুরকে করা ঠাট্টা থেকে স্পষ্ট। শোনা যায়, সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কেন্দ্রের বিশ্বব্যাপী প্রচারের প্রতিনিধি দলে, কংগ্রেসের তরফে কেন্দ্রের প্রস্তাবে যে নামের তালিকা দেওয়া হয়েছিল সেখানে শশী থারুর নামই ছিল না। কংগ্রেসের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে শশীকে ওই গুরুত্বপূর্ণ সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে নেতা হিসেবে কেন্দ্র মনোনিত করায় কংগ্রেসের অন্দরে বেশ অসন্তোষ তৈরী হয়েছে এই সাংসদকে নিয়ে।