কৃষি বিল নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল তরজা
‘কাটমানি’র জন্যই ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ রাজ্য সরকার হাতে চাইছে বলে অভিযোগ করল বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের দাবি, সেই কারণেই তৃণমূল কৃষিবিলেরও বিরোধিতা করছে। বিজেপির এই অভিযোগ নস্যাৎ করে তৃণমূল অবশ্য জানিয়েছে, কৃষকদের লুঠের পরিকল্পনায় আপত্তি করায় কুৎসায় নেমেছে বিজেপি।
বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে কৈলাস বলেন, ‘‘কিষাণ সম্মান নিধির টাকা সরাসরি চাষির অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। রাজ্যে কাটমানির সরকার চলছে।। তাই এখানে তা চালু করা হয়নি। কৃষি বিল চালু হলেও কাটমানি মিলবে না।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিবিলের ‘উপযোগিতা’ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে চাষি তাঁর ফসল মান্ডিতে বিক্রি করতে গেলে মাঝে সোসাইটি রয়েছে। সোসাইটি চালায় তৃণমূল। এই বিলের ফলে তৃণমূলের পকেটে আর সেই টাকা যাবে না। তাই এত বিরোধিতা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কৃষকদের স্বাধীনতা দিয়েছে এই বিল। দেশের যে কোনও জায়গায় যেখানে বেশি দাম পাবেন, সেখানেই ফসল বিক্রি করতে পারবেন।’’
তৃণমূল অবশ্য কৃষি বিল নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছে বিজেপি ও কেন্দ্রকে। দলের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে রাজ্যের অর্থও থাকে। তাই নির্বাচনের আগে সরাসরি কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তা নিয়ে আমরা রাজনীতি করতে দেব না। সাংবিধানিক ব্যবস্থা মতোই রাজ্য এই প্রকল্প রূপায়ণের প্রস্তাব দিয়েছে।’’ ‘কাটমানি’ সংক্রান্ত অভিযোগের জবাবে সুখেন্দুবাবু বলেন, ‘‘লুটের অতীত আছে এমন লোকেদের মানসিকতার মধ্যে এ সব বসে আছে। তাই নিজেদের অভিজ্ঞতার বাইরে তাঁরা ভাবতে পারেন না।’’ সুখেন্দুবাবুর কথায়, ‘‘নীলচাষ নিয়ে বিদ্রোহের মুখে পড়ে ব্রিটিশ সরকারও সেই আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছিল। বিজেপি সরকারকেও সেই পথে হাঁটতে হবে।’’
এই বক্তব্য সামনে রেখে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছে তৃণমূল। মহিলা ও ছাত্র সংগঠনের পরে এদিন রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে দলের কৃষক সংগঠন। আজ শুক্রবার ধর্মতলায় গাঁধী মূর্তির সামনে বড় সভা করবেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি বেচারাম মান্না।
কেন্দ্রীয় কৃষি বিলের পক্ষে প্রচারে নামছে রাজ্য বিজেপিও। রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে এক সপ্তাহ রাজ্যের সব ব্লকে পদযাত্রা করবেন তাঁরা। পরে হাটবাজার ও চায়ের দোকানে কৃষকদের বিল সম্পর্কে বোঝাবেন বিজেপি নেতৃত্ব।