১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের পরে জন্মানো কাউকে দিতে হবে না বাড়তি নথি, মমতার চাপেই সিদ্ধান্ত বদল কমিশনের!
কমিশনকে ‘বিজেপির প্রচারক’ বলেও কটাক্ষ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘‘তরুণ প্রজন্ম যাতে ভোট দিতে না পারে, সেই কারণেই কি এই নিয়ম?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৫২: সামনেই বিহারের বিধানসভা ভোট। তার আগেই নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার সার্বিক সংশোধনের কথা জানিয়েছিল। একগুচ্ছ নির্দেশিকাও জারি করেছিল। কমিশনের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর দাবি, বিহার বাহানা, কমিশনের আসল নিশানা বাংলা।
কমিশন জানিয়েছিল, নাগরিকত্বের সুনির্দিষ্ট পরিচয়পত্র ছাড়া ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে না। এ ছাড়াও ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল না, তাঁদের জন্মস্থানের প্রামাণ্য নথি জমা করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, সকলকে ভারতীয় নাগরিকত্বের ‘সেল্ফ অ্যাটেস্টেড ডিক্লারেশন’ জমা দিতে হবে বলেও জানায় কমিশন। পাশাপাশি, কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে যাঁরা জন্মগ্রহণ করেছেন, সেই ভোটারদের জন্মতারিখ এবং জন্মস্থানের প্রমাণ্য নথি দাখিল করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে ভোটারেরা জন্ম শংসাপত্র, পাসপোর্টের মতো নথি প্রমাণ হিসাবে জমা দিতে পারবেন। ১৯৮৭ সালে ১ জুলাইয়ের পরে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের নিজের পরিচয়ের প্রমাণ্য নথির সঙ্গে বাবা-মায়েরও নথি জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর ২০০৪ সালের ২ ডিসেম্বরের পরে জন্মগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। কমিশনের এই নিয়ম নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন মমতা।
নাম না-করে কমিশনকে ‘বিজেপির প্রচারক’ বলেও কটাক্ষ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘‘তরুণ প্রজন্ম যাতে ভোট দিতে না পারে, সেই কারণেই কি এই নিয়ম? গরিবেরা কী ভাবে বাবা-মায়ের শংসাপত্র পাবেন? এটা কি এনআরসি? এ ভাবেই দেশে এনআরসি চালু করার চেষ্টা হচ্ছে কি?’’ ঘটনাচক্রে, এর দিনকয়েকের মাথায় পুরনো নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করল কমিশন।
নয়া নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে?
বিহারের ২০০৩ সালের ভোটার তালিকা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে নথিভুক্ত ৪.৯৬ কোটি ভোটারের নথি রয়েছে। নতুন করে আর কোনও নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ৪.৯৬ কোটি ভোটারের স্বীকৃতির জন্য বাবা বা মায়ের কোনও নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কোনও ভোটারের নাম যদি ২০০৩ সালের বিহারের ভোটার তালিকায় না-ও থাকে, সে ক্ষেত্রে তিনি নিজের বাবা কিংবা মায়ের অন্য কোনও নথির পরিবর্তে ২০০৩ সালের ভোটার তালিকাটি ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ, মা কিংবা বাবার জন্য আলাদা করে কোনও নথি দেখানোর প্রয়োজন নেই। মোট ভোটারদের প্রায় ৬০ শতাংশকে কোনও নথি জমা দিতে হবে না। শুধু ২০০৩ সালের ভোটার তালিকা থেকে বিবরণ যাচাই করে আবেদন ফর্ম জমা দিতে হবে।