শমীকের সংবর্ধনায় ডাক পেলেন না পূর্বসূরি দিলীপ, বঙ্গ BJP-র নয়া সভাপতির অভিষেকেও পিছু ছাড়ল না বিতর্ক

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:০৪: বঙ্গ বিজেপির সভাপতির পদে বিনা লড়াইয়ে নির্বাচিত হয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। দলের নতুন রাজ্য সভাপতিকে বরণ করে নিতে আজ, ৩ জুলাই কলকাতার সায়েন্স সিটিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শমীককে সংবর্ধনা দেওয়া হবে মঞ্চে। সেখানে ডাক পেলেন না দলের প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এই নিয়ে এক বাংলা দৈনিকের ডিজিটাল সংস্করণকে দিলীপ বলেন, এই অনুষ্ঠানে তিনি যাচ্ছেন না, কারণ, তাঁকে আলাদা করে কোনও খবর দেওয়া হয়নি। তিনি সভাপতি নির্বাচনের ভোটার নই। যাঁরা প্রদেশ পরিষদ সদস্য, তাঁরাই ভোটার। আজকের অনুষ্ঠানেও তাঁদের ডাকা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ডাক পেয়েছেন। তাঁর ওখানে যাওয়ার কথা নয়।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়া থেকেই দূরে ছিলেন দিলীপ। কিন্তু আজকের কর্মসূচিতে প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে সুকান্ত থাকলেও কেন বঙ্গ বিজেপির সবচেয়ে সফল সভাপতি দিলীপ ডাক পেলেন না? দলের অন্দরে নানা চর্চা চলছে।
সাম্প্রতিককালে দিলীপকে দলীয় কোনও কর্মসূচিতে ডাকা হচ্ছে না। মোদী, শাহের সভাতেও তিনি ডাক পাচ্ছেন না। শোনা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন না বলেই দলীয় কর্মসূচি থেকে দূরে রাখা হচ্ছে দিলীপকে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দীঘায় জগন্নাথধাম উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যাওয়া এবং দলের একাংশের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রকাশ্যে মুখ খোলার কারণেই রোষে পড়েছেন দিলীপ। সম্প্রতি গুঞ্জন ছড়িয়েছিল, দিলীপ পদ্ম ছাড়ছেন। আবার রটেছে তিনি নাকি নতুন দল গড়ছেন। সব মিলিয়ে দিলীপের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে বঙ্গ বিজেপি। নয়া সভাপতির অভিষেকেও তিনি আমন্ত্রণ পেলেন না।
শমীক ভট্টাচার্যকে সভাপতি করার প্রসঙ্গে, দুর্গাপুরে রাজীব গান্ধী মেলা ময়দান পরিদর্শনে এসে দিলীপ ঘোষ বলেন, “শমীক ভট্টাচার্য সিনিয়র নেতা, পার্টির নিয়ম মেনেই হয়েছে। সবাইকে মানিয়ে নিয়ে চলতে পারবে। আমি এখন কোনও পদে নেই, আমি কর্মীদের মত কাজ করছি।” বৃহস্পতিবার প্রাতঃভ্রমণে ডুগডুগি বাজাতে-বাজাতে হাঁটলেন তিনি। বললেন, সবাইকে জাগাচ্ছেন। তাই ডুগডুগি হাতে নিয়েছেন মানুষকে জাগাতে। কোনও বিশেষ বার্তা দিতে চাইলেন তিনি?
অন্যদিকে, দলে কোণঠাসা হয়ে পড়া শমীকের উত্থান ঘটল। তথাগত রাহ সভাপতি থাকার সময় শমীক রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক হন। রাহুল সভাপতি হওয়ার পরও ওই পদে ছিলেন শমীক। দিলীপ রাজ্য সভাপতি হলে তিনি দলের প্রধান মুখপাত্র হন। কিন্তু ‘গুরুত্ব’ কমে শমীকের।
সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শমীক কেন দলে গুরুত্ব পাননি, তা নিয়ে অনেকেই ধন্দে ছিলেন। অনেকেই বলেন, শমীক দলে অন্তর্ঘাতের শিকার। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বসিরহাট কেন্দ্রের প্রার্থী হয়ে হেরে যান শমীক। সেই বছরই বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে উপনির্বাচনে কার্যত একক শক্তিতে জেতেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শমীক দমদম কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ায় পরে তাঁর বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগ উঠেছিল, যা দলের জন্য ছিল অস্বস্তিকর। এতদিনে তিনি দলে গুরুত্ব পেতে চলেছেন। তবে কারও কারও মতে, ছাব্বিশে হার নিশ্চিত জেনে বিজেপি তাঁকে বলির পাঁঠা করল।