‘জিসকা সাথ উসকা বিকাশ’! ‘হাফ ম্যাড’ শমীক ভট্টাচার্য সম্পর্কে এই কথা কেন বলছে TMC

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:৩০: বিজেপির নবনির্বাচিত রাজ্য সভাপতিকে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন দলেরই রাজ্যসভার সাংসদ তথা ‘উত্তরবঙ্গ’কে আলাদা রাজ্য গঠনের দাবিতে সরব অনন্ত মহারাজ। বললেন, শমীক ভট্টাচার্য হাফ ম্যাড!
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে বিজেপির সাংসদ কার্তিকচন্দ্র পালের বাড়ির এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় এসে দলের নয়া রাজ্য সভাপতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এমনই মন্তব্য করেন রাজ্যসভার সাংসদ বিধানসভা ভোটের মুখে নতুন করে বির্তক উস্কে দিলেন গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। কালিয়াগঞ্জের বরুণা পঞ্চায়েতের গোয়ালগাঁও ময়দানে সভা করতে এসে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ বলেন,” উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্যের আন্দোলন করতে গিয়ে আমাকে শমীক ভট্টাচার্য অসুস্থ বলেছিলেন। কিন্তু এতদিন অপেক্ষার পর এমন এক ব্যক্তিকে রাজ্য সভাপতি পদের দায়িত্বে আনা হল,যিনি হাফ ম্যাড। ফলে বিধানসভায় কোনও পরিবর্তন হবে না।”
অন্যদিকে, বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি হয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। দলকে চাঙা করতে নানা জ্বালাময়ী ভাষণও দিয়েছেন। সেই সঙ্গেই তাঁর একটি মন্তব্যকে ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা চর্চা শুরু হয়েছে। আর সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই এবার নেমে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস।
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সোশ্য়াল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যর একটি বক্তব্যকে সামনে আনা হয়েছে। সেই পোস্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, সেখানে তিনি( শমীক ভট্টাচার্য) সংবাদ মাধ্য়মের সামনে বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বলেছেন আমিও সেকথাই বলছি। মুসলমানরা যদি মনে করে থাকেন তাদের ভোট ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন ঘটানো যাবে না, তৃণমূলের বিসর্জন হবে না তাহলে তাঁরা ভুল ভাবছেন। তাদের আমাদের ভোট দেওয়ার দরকার নেই। দেবেন না আমাদের ভোট। তারপরেও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। তাদের ভোট বাদ দিয়েই আসবে।( তৃণমূলের তরফ থেকে যে ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে সেখানে শমীক ভট্টাচার্যকে একথাই বলতে শোনা গিয়েছে।)
তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেলে, সবকা সাথ সবকা বিকাশ লিখেও কেটে দিয়ে লেখা হয়েছে, জিসকা সাথ উসকা বিকাশ। বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পরেই শমীক ভট্টাচার্য প্রকাশ্যে ঘোষণা করছেন বিজেপির সংখ্যালঘু ভোটের দরকার নেই। এটা সংবিধানে যে সেকুলার মূল্যবোধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে একটি খোলাখুলি প্রত্যাখান। ভারতের একটি গোটা অংশের জনতাকে আলাদা করা ধর্মের ভিত্তিতে সেটা মেরুকরণ, বিভাজন ও পুরোপুরি অগণতান্ত্রিক। এই ধরনের ঘৃণাসূচক বিষয়ের কোনও স্থান নেই বাংলায়। লিখেছে তৃণমূল।
উল্লেখ্য, রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই প্রথম ভাষণেই সংখ্যালঘুদের প্রতি বিশেষ বার্তা দিয়েছিলেন শমীক। তাতে প্রশ্ন ওঠে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে কি কট্টর ও মধ্যপন্থার মিশেলের মধ্যে দিয়েই এগোতে চাইছে বিজেপি ? শুভেন্দু অধিকারী যখন কট্টর হিন্দুত্বের পথে হাঁটছেন, তখন শমীক ভট্টাচার্য কিছুটা নরম পন্থা নিচ্ছেন? যাতে এই কৌশলে যত বেশি সম্ভব ভোট বিজেপির ঝুলিতে আসে? এটা কি একদা বাজপেয়ী-আডবাণীর মতো নরম-গরম কৌশলী রাজনীতি? রাজ্যনৈতিক মহলে এরকম আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ফের শমীকের সুর বদালানো নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।