বাংলার মানুষ চাইছেন না কর্মনাশা বন্‌ধ, বলপূর্বক ধর্মঘট পালনের মরিয়া চেষ্টা বামেদের

July 9, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি,১০:১০: বাংলার মানুষ গত শতকের শেষ ষাট-সত্তর বছরে বহু ধর্মঘট-হরতাল দেখে ফেলেছে। কর্মনাশা বন্‌ধ-রাজনীতি আর সইতে পারছেন না তাঁরা। ফলে বুধবার সকাল থেকেই মানুষ পথে নেমেছে। বামেদের বন্‌ধের রাজনীতিকে আম বাঙালি কার্যত প্রত্যাখ্যান করেছে। সকাল হতেই রাস্তা নেমেছে বাস, ট্যাক্সি, মেট্রোতেও ঠাসা ভিড়। ট্রেন চলাচল মোটের উপর স্বাভাবিক। বামেদের ডাকা বন্‌ধে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আগেই রাস্তা পর্যাপ্ত যানবাহন নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল রাজ্য। আজ সকাল থেকেই রাস্তায় পরিবহণ ব্যবস্থার একেবারে স্বাভাবিক চিত্র ফুটে উঠেছে। দোকানপাট খোলা। বাজার বসেছে সর্বত্র। স্কুল, কলেজও খোলা। নিত্যযাত্রীরা অফিস ও কর্মস্থলমুখী ভোর থেকেই।

উল্লেখ্য, নবান্ন তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল, বন্‌ধের দিন অর্থাৎ আজ সমস্ত রাজ্য সরকারি দপ্তর খোলা থাকবে এবং কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে। অডিট ব্রাঞ্চের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ৯ জুলাই কোনও রকম ক্যাজুয়াল লিভ বা অন্য ছুটি গ্রহণযোগ্য হবে না। যে কর্মীরা অফিসে উপস্থিত থাকবেন না, তাঁদের হাজিরা ‘ডাইস-নন’ হিসেবে গণ্য করা হবে, অর্থাৎ সেই দিনটি চাকরিজীবন থেকে বাদ যাবে। এমনকি অনুপস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মীর বেতনও কাটা যাবে। নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, যদি কোনও কর্মী অনুপস্থিত থাকেন, তবে তাঁকে শোকজ করা হবে। যথাযথ নথিপত্রসহ সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দিতে পারলে ছুটি মঞ্জুর করা হবে না এবং ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হতে পারে।

ধর্মঘট ঘিরে কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, বন্‌ধের সমর্থনে পথে নেমে বন্‌ধ সমর্থনকারী বামেরা অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করেন। বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ করা হয়। শিয়ালদহ মেন শাখায় বেলঘরিয়া, বারাকপুর-সহ একাধিক জায়গায় রেল অবরোধ করা হয়। সাতসকালেই রেল অবরোধে নাকাল হন নিত্যযাত্রীরা। হলদিয়ায় রানিচকের বন্দর স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করতে গেলে বাম সমর্থকদের তুলে দেয় রেল পুলিশ। ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েকজন বাম সমর্থককে আটক করে রেল পুলিশ।

একাধিক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বন্‌ধ সমর্থনকারী সিপিএম কর্মীরা। হাওড়ার ডোমজুড়ে বন্‌ধ সমর্থনকারী সিপিএম সমর্থকদের সরাতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। পুলিশ লাঠি চালাতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় তারা।
আসানসোলে বন্‌ধের সমর্থনে বাম সংগঠন মিছিল বের করে। অন্যদিকে বন্‌ধের বিরোধিতায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন পাল্টা মিছিল করে। বাম কর্মীরা গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। জলপাইগুড়ি শহরে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ডিপোয় একাধিক সরকারি বাস আটকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় বচসা হয় সিপিএম কর্মীদের। এখনও পর্যন্ত ১৪ জন বন্‌ধ সমর্থককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বস্তুত মানুষ বন্‌ধ-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কিন্তু রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতে বলপূর্বক বন্‌ধ পালনে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সিপিএম কর্মী সমর্থকেরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen