‘কোনও রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব কাঁধে নেবেন না’, ধনখড়কে কড়া চিঠি মমতার
রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ডিজি-কে তলব করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পাল্টা কড়া চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দিলেন, যে কোনও অছিলায় রাজ্য প্রশাসনের কাজ নিয়ে ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’ করা বা শীর্ষ কর্তাদের ডেকে পাঠানো রাজ্যপালের কাজ নয়! এই রাজ্যপাল বারেবারেই নিজের সাংবিধানিক এক্তিয়ার ছাড়াচ্ছেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ।
মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই শনিবার রাতে টুইটে ফের মুখ খুলেছেন রাজ্যপাল ধনখড়। বলেছেন, তিন বার অনুরোধের পরেও ডিজি আসেননি, তিনি তাঁর কাজের ব্যাখ্যা দিতে চান না। বরং, তাঁর হয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখছেন! রাজ্যপালের মন্তব্য, ‘‘সাংবিধানিকতা এমন আচরণের কথাই বলে? মুখ্যমন্ত্রী সঠিক পরামর্শ পাচ্ছেন তো?’’ মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির জবাবও তিনি দেবেন বলে জানিয়ে রেখেছেন রাজ্যপাল।
বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্তের প্রেক্ষিতে ডিজি বীরেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল, সঙ্গে পাঠিয়েছিলেন একটি নোটও। যা প্রশাসনিক স্তরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও পৌঁছেছে। রাজ্যপালের বক্তব্যে বাংলায় ‘সন্ত্রাসের নিরাপদ আশ্রয়, দুর্নীতি ও অবৈধ অস্ত্র নির্মাণের রমরমা’র কথা ছিল। ওই সব অভিযোগই নস্যাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে প্রশ্ন তুলেছেন, আদালতের বদলে রাজভবন কী করে কোনও অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনি শলা নেওয়ার জায়গা হল? বিচার চাইতে যে কোনও নাগরিকেরই তো আদালতে যাওয়ার অধিকার আছে। রাজ্যপাল যদি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পরামর্শ দিয়ে তাঁর হয়ে সওয়ালে দাঁড়ান, তা হলে তিনি নিজেকে এবং এই রাজ্যকে বিপন্ন করেছেন!
এরই পাশাপাশি মমতা ফের রাজ্যপাল ধনখড়কে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘নির্বাচিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আবার আপনার প্রতি অনুরোধ ও পরামর্শ, সংবিধানের গণ্ডির মধ্যে থাকুন। কোনও রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব কাঁধে নেবেন না। নির্বাচিত সরকার ও তার মন্ত্রিসভাকে হেয় প্রতিপন্ন করে নিজের ক্ষমতার বাইরে গিয়ে রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের উপরে হুকুম চালাবেন না’!
মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, রাজ্যপালের পদ থেকে প্রতিনিয়ত পুলিশ-প্রশাসনকে হেয় করা হলে সাধারণ মানুষও বিভ্রান্ত হবেন এবং তাতে হানাহানি বাধবে। ধনখড়ের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, রাজ্যপালের অভিযোগের পক্ষে কোনও তথ্য থাকলে জনস্বার্থেই তা প্রশাসনের কাছে জানানো উচিত।