‘বাঙালির ঐতিহ্য ও আবেগে আঘাত’, সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে ভাঙা নিয়ে সরব অভিষেক
অভিষেক মন্তব্য করেন, এই সিদ্ধান্ত বাঙালির ঐতিহ্য ও আবেগে সরাসরি আঘাত। তাঁর দাবি, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৫৬: বাংলাদেশের ময়মনসিংহে সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Roy) পৈতৃক ভিটে ভেঙে ফেলার ঘটনায় ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। এবার এ বিষয়ে মমতার পর প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন অভিষেক। তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে মন্তব্য করেন, এই সিদ্ধান্ত বাঙালির ঐতিহ্য ও আবেগে সরাসরি আঘাত। তাঁর দাবি, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক। ভারত সরকারের কাছেও আর্জি, বিষয়টি নিয়ে ঢাকার সঙ্গে আলোচনা হোক।
ইউনুস সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত বাঙালির ঐতিহ্য ও আবেগে সরাসরি আঘাত। পাশাপাশি ভারত সরকারের তরফে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) সঙ্গে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অভিষেক (Abhishek Banerjee) এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাসভবনটি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভেঙে ফেলছে। এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ এই বাড়িটিকে ভেঙে ফেলা আমাদের ঐতিহ্যের উপর আক্রমণের চেয়ে কম কিছু নয়। এটি বাঙালির বিবেকেও আঘাত।”
বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ শহরের হরিকিশোর রায় রোডে অবস্থিত শতাব্দীপ্রাচীন এই বাড়িটি আগে ‘শিশু অ্যাকাডেমি’-র অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হত। তবে ২০০৭ সালের পর থেকে তা অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি সেটি ভেঙে বহুতল নির্মাণের কাজ শুরু করেছে জেলা শিশু অ্যাকাডেমি। যদিও ভবনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও রায় পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক অনেক পুরনো।
এই বাড়িটি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর (Upendrakishore Ray Chowdhury) সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। হরিকিশোর রায় ছিলেন তাঁর পালক পিতা। বাংলা শিশু সাহিত্য ও চিত্রকলার অগ্রদূত উপেন্দ্রকিশোর এই বাড়িতেই দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। এখানেই শুরু হয়েছিল সেই সাংস্কৃতিক পরম্পরা, যা পরবর্তী সময়ে সুকুমার রায় এবং সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “রায় পরিবার বাংলার সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। উপেন্দ্রকিশোর বাংলার নবজাগরণের এক স্তম্ভ। এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি বাংলাদেশ সরকার এবং সেখানকার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের কাছে আবেদন জানাই—বাড়িটি যেন ভাঙা না হয়। ভারত সরকার এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক।”
নয়াদিল্লিও মঙ্গলবার রাতে এ নিয়ে সরব হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতিবিজড়িত এই ভবনটির সংস্কার এবং সংরক্ষণের প্রস্তাব বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এটিকে সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রদর্শশালায় রূপান্তরের জন্য ভারত সরকার অর্থসাহায্য করতে প্রস্তুত বলেও জানানো হয়েছে।